চিত্রদেশ

চলে গেলেন জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চু

স্টাফ রিপোর্টার:
অবশেষে করোনার সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা সাদেক বাচ্চু। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী বাংলাদেশ জার্নালকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সোমবার সকাল ১২টা ১৫ মিনিটে সাদেক বাচ্চু মৃত্যুবরণ করেছেন।

গত শনিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন এই অভিনেতা। মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোভিড ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকলেও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

এর আগে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গেল ৬ সেপ্টেম্বর দ্রুতই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় এই অভিনেতাকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি দেখে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে এক বোর্ড মিটিং করা হয়। মিটিং শেষে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সাদেক বাচ্চুর চিকিৎসায় ডাক্তারদের আর কিছুই করার নেই।

সাদেক বাচ্চু বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম খল-অভিনেতা। গুণী এই অভিনয়শিল্পী বেশ কিছুদিন ধরে অভিনয়ে অনিয়মিত। পাঁচ দশকের লম্বা ক্যারিয়ারে মঞ্চে, বেতারে, টিভিতে, সিনেমায়, সর্বত্র দাপুটে বিচরণ ছিল তাঁর। অবশ্য রেডিও, টেলিভিশনে যাওয়ার আগে মঞ্চে ওঠেন সাদেক বাচ্চু। শিশুকাল থেকে মঞ্চের সঙ্গে তাঁর বন্ধন। মতিঝিল থিয়েটার তাঁর নাট্যদল। দলের সভাপতি তিনি। এখনো নাটক রচনা করেন, নির্দেশনা দেন। গত বইমেলায়ও মুক্তমঞ্চে নাটক মঞ্চস্থ করেছেন।

১৯৭৭-৭৮ সালে বিটিভির নিয়মিত শিল্পী হিসেবে অভিনয় শুরু করেন সাদেক বাচ্চু। বিটিভিতে তার অভিনীত প্রথম নাটক ‘প্রথম অঙ্গীকার’। মঞ্চ ও টিভি নাটক থেকে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৮৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রামের সুমতি’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন সাদেক বাচ্চু। এরপর প্রায় পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন তিনি। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেন বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম খল-অভিনেতা হিসেবে।

এই অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘জীবন নদীর তীরে’, ‘জোর করে ভালোবাসা হয় না’, ‘তোমার মাঝে আমি’, ‘ঢাকা টু বোম্বে’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘এক জবান’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘বধূবরণ’, ‘ময়দান’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘প্রিয়জন’, ‘সুজন সখি’ ইত্যাদি।

২০১৮ সালে ক্যারিয়ারের একমাত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় করেন সাদেক বাচ্চু। অভিনয় জীবনের বাইরে তিনি বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। একজন লেখক হিসেবেও নানা বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেন তিনি।

চিত্রদেশ//এল//

Related Articles

Back to top button