প্রধান সংবাদশিক্ষা

চলমান পরিস্থিতিতে পেছাতে পারে এইচএসসি পরীক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার:
বিশ্বের নানান দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ভয়ের কারণ হয়ে উঠছে করোনাভাইরাস। এরই মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন আরো অন্তত ১০ জন। যার ফলে আতঙ্কে রয়েছে শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টরা। আর এ কারণে আসন্ন উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা পেছানোর দাবি করছেন কেউ কেউ। তবে ১ এপ্রিলে আসন্ন পরীক্ষা পেছাবে কিনা তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না সংশিষ্টরা। তারা বলছেন ‘অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এখন যে পরিস্থিতি তা চলমান থাকলে পরীক্ষা কিছুদিন পেছাতে পারে। কিন্তু আগামী আট-দশদিনে যদি দেশের করোনা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যায় তাহলে পরীক্ষা পেছানো হবে না।

জানা যায়, পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তারাও আতঙ্কে আছেন। সরকার সভা সমাবেশ এড়িয়ে চলার সতর্কতা জারি করায় এইচএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে গত সোমবার ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীন সব পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবদের সভা ডাকা হলেও তা স্থগিত করা হয়।

সূত্রমতে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে তা কেন্দ্রে পৌঁছানো ও কেন্দ্র প্রস্তুতসহ সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শেষ করা পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়ার সাথে কয়েক লাখ কর্মকর্তা, শিক্ষক জড়িত। তার সঙ্গে সারাদেশে ১১ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় বসার কথা রয়েছে। পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে কর্মকর্তা-শিক্ষকদের সভা করতে সমাবেত হতে হয়। এতে করে একে অপরের সংস্পর্শে এসে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরীক্ষা স্থগিত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হতে পারে।

এ বিষয়ে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক স্থগিত হয়েছে, তবে পরীক্ষা পেছানোর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, পেছানো হবে কিনা তা আরো এক সপ্তাহ পর বিবেচনা করে হবে’।

তবে করোনাভাইরাস আতঙ্কে পরীক্ষা আয়োজনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে বলে জানান জিয়াউল হক।

তিনি বলেন, করোনায় স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সার্বিক কাজ-কর্মও বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি যত দ্রুত স্বাভাবিক হবে আমাদের কার্যক্রম ততো দ্রুত শুরু হবে।

এদিকে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, ‘আমরা এখনই এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। কাছাকাছি সময়ে গিয়ে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ দূরত্বে রাখতে এক বেঞ্চ পর পর সিট প্ল্যান করা হবে বলে তিনি জানান।’

প্রসঙ্গত, আগামী ১ এপ্রিল বাংলা (অবশ্যিক) প্রথম পত্র দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ৪ মে পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা আয়োজন হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর ৫ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৩ মে পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার মন্ত্রিসভায় দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। একইদিন সংবাদ সম্মেলন ডেকে দুপুর ১টায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং দেড়টায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তের কথা জানান।

চিত্রদেশ//এস//

Related Articles

Back to top button