কানিজ কাদীরের ভ্রমণ কাহিনি-‘মাদুরাই’ (পর্ব-২২)
ইমিগ্রেশনে এক্সট্রা চার্জ দিতে হয়েছে রকিবুল ও আমাকে। আমাদের খুব মন খারাপ হয়ে গেল। অযথা বেশ কিছু টাকা গচ্ছা দিতে হলো। আমরা চেন্নাই এর উদ্দেশ্যে প্লেন এ উঠলাম। প্রায় দেড় ঘন্টা পর আমরা চেন্নাই পৌছেঁ গেলাম। এয়ারপোর্টে এককর্মী আমাকে লাগেজ টানতে সাহায্য করলাে।আমি ওকে কিছু বখশিস দিলাম। আমরা প্রিপেইড ট্যাক্সিতে উঠলাম। আমাদের হোটেল ‘সাভেরা’য়’ উঠার কথা ছিল। ট্যাক্সি ড্রাইভার আমাদের হোটেল ‘হিলটনে’র এর কথা বললো যে এটা ‘সাভেরা’র চেয়ে ভাল আর বীচ এর একদম কাছে। আর ‘হিলটনে’র ভাড়াও অনেক কম। আমরা ‘হিলটনে’ই একরাত কাটিয়ে দেবার চিন্তা করলাম। আমাদের যে এক্সট্রা চার্জ দিতে হয়েছে সেটা কিছুটা মেকআপ হবেও ভাবলাম।
আমরা হোটেল ‘হিলটনেই’ উঠলাম। আমি ও রাফিজা ২০৩ নং রুম ও রকিবুল ২০২ নম্বর রুমে উঠলাম। এটা মোটামুটি হোটেল। রুমে ঢুকে দেখলাম ডাবল বেডসহ মোটামুটি সব ব্যবস্থাই আছে। অল্প টাকায় একরাত কাটিয়ে দেয়া যাবে। আমরা একটু ফ্রেস হয়েই নীচে নামলাম। পাশের রেস্টুরেন্টেই খেয়ে নিলাম। কিন্তু বিকাল হয়ে যাওয়াতে রেস্টুরেন্টে আমাদের আধঘন্টা বসে থেকে শুধু ডিম ভাজি ও ভুনা ডাল দিয়েই ভাত খেতে হলো। এরপর আমরা হেটেঁই বীচ এ গেলাম।পাচঁ মিনিটের রাস্তা। এটা ‘মিনারা বীচ’ এর গান্ধী সাইটিং প্লেস।বীচে ঢোকার সময়ই বিশাল বড় গান্ধীর মূর্তি দেখতে পেলাম। রাফিজা সমুদ্র দেখে খুব খুশি হলো। সমুদ্রের ঢেউগুলো দেখতে খুব ভাল লাগছিল। সমুদ্রের তীরে অনেক লোকের সমাগম। রাফিজা ও রকিবুলের অনেক ছবি তুললাম আমি। আমার ছবি তুলতে একদম ইচ্ছা করছিল না। তবু রাফিজার অনুরোধে বেশ কয়েকটি ছবি তুললাম। কিছু স্মৃতি থাক ভাবলাম। এখানে একেবারে সন্ধ্যা হয়ে গেল। আমরা হাটঁতে হাটঁতে ফিরছিলাম। বেশ কিছু দোকান পাট গড়ে উঠেছে সমুদ্র তীরে। শামুক, ঝিনুকের বিভিন্ন সরঞ্জামাদী, নানা রকমের খেলার উপকরণ ও খাবার দিয়ে সাজানো দোকানগুলো। কিছু খাবার দোকানে ফুচকা, চটপটি, সমুচা, সিঙ্গারা বিক্রি হচ্ছিল। রাফিজা বারবার বলছিল ‘সেই বেসন মরিচের বড়াটা যদি আবার খেতে পারতাম ‘। বলতে বলতেই দেখি এক মহিলা চুলায় বেসন মরিচের বড়া ভাজছে।মহিলার দোকানটা চারিদিকে কাপড় দিয়ে ঘেরাও করা। সে সুতা দিয়ে আবার বড় বড় মরিচগুলো দোকানের সামনে ঝুলিয়ে রেখেছে। মহিলা মরিচের বড়াগুলো বানাচ্ছে আর গরম গরম সবাইকে খেতে দিচ্ছে। আমরাও দোকানের সামনের টুলে বসে গরম গরম বেসন মরিচের বড়া খেলাম। (চলবে)