কানিজ কাদীরের ভ্রমণ কাহিনি- ‘মাদুরাই'(পর্ব-১৫)
ট্রেনিং এর সময় যাচ্ছে একই রুটিনে। সকাল পনে আটটার দিকে নিচে ব্রেকফাস্ট করতে যাই। তারপর আবার রুমে আসি।সব গুছিয়ে নিয়ে ৯টায় হাসপাতালে যাই। ওটিতে ঢুকি। সেখানে থাকি ১-৩০ মিনিট পর্যন্ত। দুপুরে রুমে আসি গোসল সারি, কাপড় ধুই,নামায পড়ি। দুপুরের খাবারের জন্য নিচে যাই সবাই মিলে। আবার বিকেল ৪টায় হাসপাতালে যাই।রাত পনে আটটায় ডিনারের জন্য ক্যাফেটেরিয়ায় যাই। রাতের খাবার শেষে রিসিপশনে বসে গল্প করি। এই রুটিনের মধ্যেই আমরা যার যার প্রয়োজনীয় কেনাকাটা একসাথে মিলেই করেছি। রাতে রুমে এসে মাঝে মাঝে পড়াশোনা করি, টেলিভিশন দেখি, বাসায় ফোনে কথা বলি। রুমে একা একা বেশ খারাপ লাগে। রুমে এলেই আম্মার কথা খুব বেশি করে মনে পড়ে।মনে হয় আমার চারিদিকে সব হচ্ছে। আমি অনেক কিছুই করছি। কিন্তু আমার সাথে কি যেন এক শূণ্যতা ঘুরে বেড়াচ্ছে।
‘মাদুরাই’ এই শহরের নাম আমি কখনো শুনি নাই আগে। এখানে না আসলে এই শহরের এত কিছু কিছুই জানতাম না। ‘মাদুরাই’ ইন্ডিয়ার তামিল নাড়ুর প্রদেশের দ্বিতীয বৃহতম শহর। চেন্নাই তামিল নাড়ুর রাজধানী ও প্রথম বৃহত্তম শহর। তামিল নাড়ুর ভাষা তামিল । এরা বেশির ভাগ মানুষ তামিল ভাষায়ই কথা বলে। তবে যারা কিছুটা শিক্ষিত তারাও মোটামুটি ইংরেজী ভাষায় কথা বলতে পারে। ওদের ইংরেজী বলার ধরনটাও একটু যেন কেমন। তবে বেশ স্পষ্ট উচ্চারনে এরা ইংরেজী বলে। ‘মাদুরাই’ শহরের লোকসংখ্যা বেশ কমই । সাধারন লোকদের দেখলে খুব আনস্মার্ট মনে হয়। কাপড়-চোপড়ে এরা একেবারেই সাধারন। মোড়ে মোড়ে গান-বাজনা হচ্ছে। লোকজনের কপালে টিপ আছেই। জায়গায় জায়গায় নান ধরনের মূর্তি। এরা যে কাকে পূজা করে বোঝা মুশকিল। চারদিকে শুধু নানা ধরনের মূর্তি দিয়ে সাজানো। বিশেষ করে পুরনো বাড়িগুলোর গায়ে নানা ধরনের মূর্তিতে ভরা।
রাস্তায় বের হলে কেমন যেন একটা উৎকট আতরের গন্ধ। এরা রান্নাতেও কি মশলা যেন দেয়। গন্ধটা আমি সহ্য করতে পারি নাই। এদের মেয়েরা বেশ সাজতে পছন্দ করে। চুলে এরা সাধারণত বেনী করে। বেনীতে বেশীর ভাগ মেয়েই বেলী জাতীয় সাদা ফুলের মালা পরে।(চলবে)