গল্প-কবিতা

কানিজ কাদীরের ভ্রমণ কাহিনি- ‘মাদুরাই'(পর্ব-১৪)

আমরা ভিতরের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলাম। কিন্তু বাতাস ও কুয়াশায় একেবারে ভিজে যাচ্ছিলাম। ঠান্ডায় একেবারে কুকরে যাচ্ছিলাম। সাইটিং স্পট এর কিছুই দেখতে পারছিলাম না কুয়াশার জন্য। খুব আফসোস হচ্ছিল কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছিলাম না দেখে।ভয় হচ্ছিল প্রচন্ড ঠান্ডায় না আবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে যায়। রাফিজা ও আমি একসাথেই ধরে ধরে হাটঁছিলাম। রকিবুল সামনে ছিল। ছাতা খুলে ধরলাম। বাতাসে ছাতা ধরে রাখতে পারছিলাম না। কতদূর যেয়ে আমরা বড় রাস্তা পাব বুঝতে পারছিলাম না। দেখলাম দু’জন লোক উল্টাদিক দিয়ে আসছে। আর কতদূর যেতে হবে বলতেই একলোক বলে উঠলো এইতো আর ৫মিনিট গেলেই বড় রাস্তা পেয়ে যাবেন। আমরা মুহূর্তেই চমকে উঠলাম যে লোকটা তামিল বললো না ইংরেজী বললো না বাংলা বললো । লোকটার মুখে হঠাৎ করে বাংলা কথা শুনে খুব ভাল লাগলো । আমরা একটু হেসে উঠলাম।

অবশেষে হাটঁতে হাটঁতে আবার লোকালয়ে এলাম। ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে দাড়িঁয়ে ছিল ।তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠলাম। আবার ফেরার পথে রওনা দিলাম। কিছু দূর আসার পর কুয়াশা একদম কেটে গেল। ড্রাইভার আমাদের আফসোস দেখে কয়েক জায়গায় গাড়ি থামালো ।যেখান থেকে দূরের পাহাড়গুলো খুব সুন্দর দেখায়। আমরা নেমে বেশ কিছু ছবি তুললাম । রকিবুল বারবার বলছিল ”আপা, চলেন আবার যাই।” কুয়াশা একদম কেটে গেল। ড্রাইভার আমাদের আবার সেই বড় ঝর্ণা ”সিলভার ক্যাসেলে”র কাছে এনে গাড়ি থামালো।এখন একদম পরিষ্কার। রোদও উঠে গেছে। এখানে বেশ কিছু ছবি তুললাম, ভিডিও করলাম। সবচেয়ে মজা লাগালো তেলে ভাজা একধরনের বড় মরিচের বেসন বড়া। খুব মজা করে খেলাম। স্থানীয় মহিলারা এই মরিচের বড়াগুলো ভেজে বিক্রি করছিল। আমরা মরিচের বেসনবড়াগুলো খুব মজা করে খেলাম। আমরা স্থানীয় দোকানগুলো থেকে একটু কেনা কাটাও করলাম। আমি একটা সুয়েটারও কিনে ফেললাম।গাড়ি সামনের দিকে আগালো। আমরা চারিদিকের অপূর্ব শোভামন্ডলী দেখতে দেখতেই এলাম। হোস্টেলে ফিরতে ফিরতে রাত ৮টা হয়ে গেল।

এর মধ্যে আর একদিন মিলিনিয়াম মার্কেটে গেলাম। মিনাক্ষী মন্দীরও দেখতে গেলাম। বিশাল উচ্চতার মন্দির । মিনাক্ষী মন্দির দেখে মনে হলো এর স্থাপত্যকলা কত সুন্দর করেই না শিল্পী করেছে যা সত্যিই বিস্ময়কর। কিন্তু এর গায়ে বিচিত্র রকমের মূর্তি দেখে খুব খারাপ লাগছিল। আর মানুষের এই মূর্তিগুলোর প্রতি অন্ধ শ্রদ্ধা দেখে একধরনের শয়তানের প্ররোচনা ছাড়া আর কিছু মনে হচ্ছিল না। আমরা মিনাক্ষীর কাছাকাছি কয়েকটি দোকান থেকে অনেক কিছুই কিনলাম। (চলবে)

Related Articles

Back to top button