স্বাস্থ্য কথা

করোনা থেকে সুস্থতার পরও যেসব উপসর্গ থাকে

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

কোভিড-১৯ অর্থাৎ করোনাভাইরাস সংক্রমণে জ্বর, শুষ্ক কাশি ও ক্লান্তি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত উপসর্গ। এই সংক্রমণের আরো কিছু উল্লেখযোগ্য উপসর্গ হচ্ছে- পেশি ব্যথা বা শরীর ব্যথা, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা, চোখ লাল হওয়া, স্বাদের অনুভূতি হারিয়ে ফেলা, ঘ্রাণশক্তি কমে যাওয়া, ত্বক লাল হওয়া, পায়ের আঙুলে বিবর্ণতা ও ডায়রিয়া। সংক্রমণটির দুটি মারাত্মক উপসর্গ হচ্ছে শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা বা চাপের অনুভূতি।

অনেকেই মনে করেন শরীর ভাইরাসমুক্ত হওয়া মানে সকল উপসর্গ চলে যাওয়া। কিন্তু কিছু উপসর্গের ক্ষেত্রে এটা সত্য নাও হতে পারে। কোভিড-১৯ রোগীরা জানান যে করোনাভাইরাস টেস্টে নেগেটিভ রেজাল্ট আসার দীর্ঘসময় পরও কিছু উপসর্গ রয়ে গেছে। এখানে কোভিড-১৯ থেকে নিরাময় পাওয়ার পরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এমন চারটি উপসর্গ উল্লেখ করা হলো।

ক্লান্তি: জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে (জেএএমএ) প্রকাশিত গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ৫৩.১ শতাংশ জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার দুই মাস পরও ক্লান্তি লেগে ছিল। আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) প্রতিবেদনেও ক্লান্তির অবস্থান শীর্ষে ছিল। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ও সার্ভাইভারস কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে ১,৫৬৭ জন কোভিড-১৯ সার্ভাইভারের ওপর পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, তাদের অধিকাংশই সুস্থ হওয়ার পরও ক্লান্তিতে ভুগছেন। ন্যাশভিলেতে অবস্থিত ভেন্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির মেডিক্যাল আইসিইউর পরিচালক টড ডব্লিউ. রাইস বলেন, ‘ফ্লু অথবা শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য রোগের তুলনায় কোভিড-১৯ জনিত ক্লান্তির স্থায়িত্ব বেশি মনে হচ্ছে।’

শরীর ব্যথা: কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন এমন রোগীরা পেশি ব্যথা বা শরীর ব্যথার অভিযোগও করেছেন, বলেন নিউ ইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত লিনক্স হিল হসপিটালের ইমার্জেন্সি ফিজিশিয়ান রবার্ট গ্লেটার। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি যাদের ওপর জরিপ চালিয়েছেন তাদের ২৬.৫ শতাংশ জানিয়েছেন যে শরীরে ব্যথা ছিল। শুধু পেশী ব্যথা বা শরীর ব্যথা নয়, কিছু রোগীরা নিরাময়ের পরও মাথায় ব্যথা, বুকে ব্যথা, গলায় ব্যথা, পিঠের নিচের অংশে ব্যথা, স্নায়ুতে ব্যথা ও কিডনিতে ব্যথা অনুভব করেছেন। এই জরিপ থেকে আরো জানা গেছে, এসব ব্যথা অসহনীয় মাত্রার ও নিয়ন্ত্রণে কঠিন হতে পারে।

মনোযোগে সমস্যা: কোভিড-১৯ রোগ থেকে সুস্থ হওয়া অনেকে জানান যে, তাদের মনোযোগ দিতে সমস্যা হচ্ছে ও মনোযোগের সময়-দৈর্ঘ্য কমে গেছে। পাবলিক হেলথ কমিটি অব দ্য ইনফেকশাস ডিজিজেস সোসাইটি অব আমেরিকার সদস্য এলিসা চয় বলেন, ‘কেবল কোভিড-১৯ নয়, অন্যান্য ভাইরাস সংক্রমণেও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যেতে দেখা গেছে।’ শরীর ভাইরাসমুক্ত হওয়ার সাথে সাথেই যে সবকিছু আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যাবে এমনটা নাও হতে পারে।সংক্রমণের কিছু প্রতিক্রিয়া দূর হতে বেশি সময় লাগতে পারে।

শ্বাসকষ্ট: অনেক কোভিড-১৯ সার্ভাইভার জানিয়েছেন যে, নিরাময়ের পরও তাদের শ্বাসকষ্ট অব্যাহত ছিল।

চিত্রদেশ//এল//

Related Articles

Back to top button