ওমরাহ পালনে বাংলাদেশসহ বিদেশিদের মানতে হবে যেসব শর্ত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর ধরে সৌদিতে অবস্থানরতদের নিয়ে সীমিত আয়োজনে হজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশসহ অনেকে দেশের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে ওমরাহ। আগামী ১ মহররম (সম্ভাব্য ১০ আগস্ট) থেকে ৯টি দেশ ছাড়া বাংলাদেশসহ অনেক দেশের জন্য ওমরার অনুমোদন দিয়েছে সৌদি সরকার। তবে বেশ কিছু শর্ত পালন সাপেক্ষে এ ওমরাহ পালনের সুযোগ পাবে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকরা।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক ‘হারামাইন শারিফাইন’ নামক অফিসিয়াল পেইজে প্রকাশিত কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন। যেখানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে ওমরাহ করতে আসতে হলে শুরুতেই যেসব শর্ত মানতে হবে; তাহলো-
১. ওমরাহ করতে ইচ্ছুক মুসল্লিরা বিশ্বের সব দেশ থেকে সরাসরি ফ্লাইটে সৌদি আরবে প্রবেশ করতে পারবে। তবে ১৩ দেশের মুসল্লিরা ওমরা করতে পারবে না। দেশগুলো হচ্ছে- আফগানিস্তান, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, মিসর, ইথিওপিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেবানন, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, ভিয়েতনাম এবং আরব আমিরাত।
যদিও আগে ৯ দেশের ওপর ওমরাহ নিষেধাজ্ঞা ছিল; গত ২৮ জুলাই আরও ৪ দেশ- আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, ভিয়েতনাম ও আরব আমিাতের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে এই দেশগুলো থেকে কোনো মুসল্লি যদি ওমরাহ করতে চায়; তবে তৃতীয় কোনো দেশে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষে তবেই সৌদি আরবে ওমরাহ করতে যেতে পারবে।
২. ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক সবাইকে আগে থেকেই বাধ্যতামূলকভাবে করোনাভাইরাসের সম্পূর্ণ ডোজ টিকা নিতে হবে। আর সেই টিকা হতে হবে- ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের। এসব টিকার দুটি ডোজ গ্রহণ করা ছাড়া সৌদি আরবে প্রবেশ করা যাবে না।
৩. কেউ যদি চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকার দুটি ডোজ টিকা নিয়ে থাকেন কিংবা উল্লেখিত টিকা ছাড়া অন্য কোনো টিকা নিয়ে থাকেন তবে তাদেরকেও ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার বাড়তি বুস্টার ডোজ গ্রহণ করতে হবে।
৪. ওমরাহ পালনের জন্য ১৮ বছর বা বেশি বয়সীদেরই অনুমোদন দেয়া হবে। ১৮ বছরের নিচে কেউ ওমরাহ যেতে পারবে না।
৫. সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়া (৫০০ সংস্থা) ওমরাহ এজেন্সির মাধ্যমেই কেবল ওমরাহ পালনে ইচ্ছুকদের সৌদি আরবে আসতে হবে।
ওমরাহ পালনকারী যেসব নিয়ম মানতে হবে
ওমরাহ পালনে বিদেশ থেকে আসা প্রত্যেক মুসল্লিকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেমন-
> মাস্ক পরা;
> সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং
> সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে চলা।
এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সব ধরনের সাবধানতা এবং নিয়ম-কানুন কঠোরভাবে মেনেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণেই গত দুই বছর ধরে বিশেষ শর্ত মেনে সীমিত পরিসরে হজ আয়োজন করে সৌদি সরকার। এমনকি বাইরের দেশ থেকে কাউকে হজের জন্য অনুমোদনও দেওয়া হয়নি। শুধু সৌদিতে অবস্থানকারী স্থানীয় ও ১৫০ দেশের প্রবাসীদের হজের অনুমোদন দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, মহামারি শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ প্রায় ৮ মাস ওমরাহ কার্যক্রম বন্ধ ছির। পরে অক্টোবর ২০২০-এ সৌদি নাগরিক ও বাসিন্দারা ওমরাহ পালনের অনুমতি পেয়েছিলেন। কিন্তু বিশ্বের কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণ এড়াতে তা স্থগিত হয়ে যায়।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আগে হজ এবং ওমরাহ পালনের জন্য প্রতি বছর সারা বিশ্ব থেকে লাখ লাখ মুসল্লি সৌদি আরব ভ্রমণ করতেন। সর্বশেষ ২০১৯ সালে এক কোটি ৯০ লাখ মানুষ ওমরাহ পালন করেছিলেন।
চিত্রদেশ//এফটি//