অপরাধ ও আইনপ্রধান সংবাদ

আনিসুল হকসহ পাঁচ জনের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় দৈনিক প্রথম আলোর সাময়িকী ‘কিশোর আলো’র সম্পাদক ও লেখক আনিসুল হকসহ পাঁচ জনের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

আনিসুল হক ছাড়া বাকি যাদের মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক।

এই মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক আসিফ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এরপরও আসামিরা হাজির না হলে বা গ্রেপ্তার করা না গেলে তাদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। তাতেও কাজ না হলে তাদের পলাতক দেখিয়েই বিচার শুরু হবে।

এর আগে নাইমুল আবরার নিহত হওয়ায় কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল আলিম এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। এরপর প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামি জামিন নেন।

প্রসঙ্গত, বিগত বছরের ১ নভেম্বর রাজধানীর রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে প্রথম আলোর মাসিক সাময়িকী কিশোর আলোর বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান চলাকালে ওই মাঠেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় আবরার। ওই ঘটনায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে ৬ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন আবরার রাহাতের বাবা মজিবুর রহমান। মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক এবং কিশোর আলোর প্রকাশক মতিউর রহমানসহ অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। আদালত আবরারের লাশ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।

আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে বাদীর অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন। গত ১৬ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক আবদুল লতিফ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামিদের দায়িত্বে অবহেলায় আবরারের মৃত্যু হয়েছে। কিশোর আলোর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের মঞ্চ ও প্যান্ডেলে যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছিল তা ছিল ১২০ কেভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর পরিচালিত। তদন্তের সময় সেখানে সংযোগ দেয়া বৈদ্যুতিক তার জব্দ করা হয়। বিভিন্ন তার বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা করা হয়।

দেখা গেছে, অনুষ্ঠানস্থলের বিদ্যুতের তারের সংযোগ লাইন সঠিক ছিল না। তারের বিভিন্ন স্থান জোড়াতালি দেয়া ছিল। কোনো কোনো স্থানে স্কচটেপ লাগোনো ছিল। বিভিন্ন স্থানে তারের ইনসুলেশন খোলা ছিল। মোট কথা বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল অরিক্ষত।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আবরার রাহাত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আগে আরো কয়েকজন ওই সব তারে জড়িয়ে পড়ে। তারা অভিযোগ করার পরও বিদ্যুৎ লাইন ঠিক না করে অনুষ্ঠান চালিয়ে নেয় প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ। আবরার রাহাত বিদ্যুৎস্পষ্ট হওয়ার পর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক জেনেও অনুষ্ঠান চালিয়ে যান আয়োজকরা। তার যথাযথ চিকিৎসাও দেয়া হয়নি।

চিত্রদেশ//এল//

Related Articles

Back to top button