আজকের মধ্যেই অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক বন্ধ না হলে কঠোর ব্যবস্থা
স্টাফ রিপোর্টার:
অনিবন্ধিত ও নবায়নবিহীন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই সময় শেষ হচ্ছে আজ রোববার (২৯ মে)। আজকের মধ্যেই যেসব অবৈধ বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হবে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মো. বেলাল হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযান চলছে। ৭২ ঘণ্টা শেষ হলে আমরা বসে হিসাব করবো- নিবন্ধনের কতটা অগ্রগতি হয়েছে। অবৈধ কতগুলো ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ হয়েছে। এরপর সে অনুযায়ী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তাদের সঙ্গে বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে সেটা যে বেশ কঠোর হবে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
এ পর্যন্ত কতগুলো ক্লিনিক বন্ধ হয়েছে, সে হিসাব আছে কিনা- জানতে চাইলে পরিচালক বেলাল হোসেন বলেন, ২৯ মে পর্যন্ত সরকারিভাবে তাদের সময় দেওয়া হয়েছে। এসময়ের পর সে তথ্য আমরা গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেব। সারা বাংলাদেশে কতগুলো লাইসেন্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রহীন ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে, তার সঠিক হিসাব আমাদের কাছে নেই। তবে, কেউ নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলে সেক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি যে, কতগুলো আবেদন এসেছে। কতগুলো লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বা কতগুলো লাইসেন্স পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আর যারা লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেনি বা লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে, তাদের তথ্য আমরা জানব কী করে?
অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা ছাড়া অভিযান কীভাবে বা কোন উপায়ে পরিচালনা করা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবৈধগুলোর নির্দিষ্ট তালিকা না থাকলেও বৈধদের তালিকা জেলা সিভিল সার্জনদের কাছে রয়েছে। মনে করুন, কোন জেলায় ৫০টি নিবন্ধিত ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে, সেই তালিকটি কিন্তু ওই জেলার সিভিল সার্জনের কাছে রয়েছে। এর বাইরে যেগুলো রয়েছে, সেগুলোর সম্পর্কে অবশ্যই সিভিল সার্জন বলতে পারেন। সে অনুযায়ী আমরা অভিযান পরিচালনা করছি এবং করবো। এসব অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক বা হাসপাতালে অভিযানের ক্ষেত্রে সিভিল সার্জনের বিরাট একটা ভূমিকা ও দায়িত্ব রয়েছে।
তবে অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী দেশে অনুমোদিত ও আবেদন করা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. বেলাল হোসেন।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২৫ মে) অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত সভায় অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরের সভাপতিত্বে দেশের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর মনিটরিং এবং সুপারভিশন বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে ৪টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সেসব সিদ্ধান্তগুলো হলো-
১. আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করতে হবে। অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।
২. যেসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নিয়েছে কিন্তু নবায়ন করেনি, তাদের নিবন্ধন নবায়নের জন্য একটি সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নবায়ন না করলে সেসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।
৩. বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অপারেশন করার সময় অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া ও ওটি অ্যাসিস্ট করার ক্ষেত্রে নিবন্ধিত ডাক্তার ছাড়া অন্যদের রাখা হলে সেসব প্রতিষ্ঠান, মালিকসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৪. যেসব প্রতিষ্ঠান নতুন নিবন্ধনের আবেদন করেছে, তারা যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে লাইসেন্স পায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। লাইসেন্স পাওয়ার আগে এসব প্রতিষ্ঠান কোনোভাবে তার কার্যক্রম চালাতে পারবে না।
চিত্রদেশ//এফটি//