প্রধান সংবাদ

মহানবীর (সা.) এর শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)- এর শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়।

তিনি বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মহানবী (সা.)- এর সুমহান আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই মুসলমানদের অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে। করোনা মহামারিসহ আজকের দ্বন্ধ-সংঘাতসময় বিশ্বে প্রিয়নবী (সা.)- এর অনুপম জীবনাদর্শ, তাঁর সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ এবং ইবাদতের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণে নিশ্চিত হতে পারে।’
বুধবার (২০ অক্টোবর) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারি, বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম এবং ওফাতের পবিত্র স্মৃতি বিজড়িত ১২ রবিউল আউয়াল তথা ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) বিশ্ববাসী বিশেষত মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত দিন। এ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন শান্তি, মুক্তি, প্রগতি ও সামগ্রিক কল্যাণের জন্য ‘রাহমাতুল্লিল আ’লামীন’ তথা সারা জাহানের রহমত হিসেবে।
নবী করিম (সা.)-কে বিশ্ববাসীর রহমত হিসেবে আখ্যায়িত করে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য রহমতরূপে প্রেরণ করেছি’ (সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ১০৭)।

মুহাম্মদ (সা.) এসেছিলেন তাওহিদের মহান বাণী নিয়ে। সব ধরনের কুসংস্কার, অন্যায়, অবিচার, পাপাচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা বহন করে এনেছিলেন তিনি। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছিলেন এবং সত্যের আলো জ্বালিয়েছেন। তিনি বিশ্বভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন এবং মানবকল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে বিশ্বে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বশান্তির অগ্রনায়ক রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, নাগরিকদের মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ নানা দিক বিবেচনা করে প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন মানব ইতিহাসের প্রথম প্রশাসনিক সংবিধান ‘মদিনা সনদ’। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.)-এর অনবদ্য ভূমিকার আরেকটি অনন্য স্মারক হুদায়বিয়ার সন্ধি। বাহ্যিক পরাজয়মূলক হওয়া সত্ত্বেও কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তিনি এ সন্ধিতে স্বাক্ষর করেন।

তিনি বলেন, তাঁর অমিত সাহস, ধৈর্য ও বিচক্ষণতা তখনকার মানুষকে যেমন বিমুগ্ধ করে, তেমনি অনাগত মানুষদের জন্যও শান্তি প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকে। মুহাম্মদ (সা.)-এর শান্তিপূর্ণ ‘মক্কা বিজয়’ মানব ইতিহাসের এক চমকপ্রদ অধ্যায়। কার্যত তিনি বিনাযুদ্ধে, বিনা রক্তপাতে ও বিনাধ্বংসে মক্কা জয় করেন।

শত অত্যাচার-নির্যাতন ও যুদ্ধ করে আজীবন যে জাতি নবী করিম (সা.)-কে সীমাহীন কষ্ট দিয়েছে, সেসব জাতি ও গোত্রকে মক্কা বিজয়ের দিন তিনি অতুলনীয় ক্ষমা প্রদর্শন করে তাদের সঙ্গে উদার মনোভাব দেখিয়ে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমা ও মহত্ত্বের দ্বারা মানুষের মন জয় করে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার এমন নজির বিশ্বে দুর্লভ।
প্রধানমন্ত্রী পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)- এর এই দিনে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহ্ তথা বিশ্ববাসীর শান্তি, মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনা করে বলেন, ‘মহান আল্লাহ আমাদেরকে মহানবী (সা.)- এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ যথাযথভাবে অনুসরণের মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণ কাজ করার তৌফিক দান করুন।’

চিত্রদেশ//এফটি//

Related Articles

Back to top button