খেলা না হলেও বাংলাদেশ ১৬ রানে জিতবে
স্পোর্টস ডেস্ক:
অধিনায়ক আকবর আলী ও পারভেজ হোসেন ইমনের দিকে তাকিয়েছিল বাংলাদেশের কোটি কোটি সমর্থক। এই দুই তরুণের ব্যাটে বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল টাইগাররা।
উদ্বোধনী জুটিতে ৫০ রান করা বাংলাদেশের হঠাৎ ছন্দপতনে ৮৫ রানে ৫ ব্যাটসম্যান হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ১০২ রানের মাথায় অভিষেক দাস সাজঘরে ফিরলে বিপদ আরও ঘনীভূত হয়। এসময় টাইগাররা ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে পড়ে। ৬ উইকেট হারানোর পর সেখান থেকে দলকে নিয়ে টেনে নিয়ে যান অধিনায়ক আকবর ও পারভেজ হোসেন ইমন।
যদিও রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমনকে নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল বাংলাদেশের সমর্থকদের। কিন্তু চোট পাওয়া পা নিয়েই সপ্তম উইকেটে মাঠে নেমে দুর্দান্ত ব্যাট করে জয়ের প্রায় দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছিলেন এ প্রতিশ্রুতিশীল ব্যাটসম্যান।
ইমনের খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে রানিং বিটুইন দ্য উইকেট দেখে অনেকেরই কষ্ট লেগেছে তার জন্য। ব্যক্তিগত ৪৭ রানে সাজঘরে ফেরার পর আবারও শংকা জাগে বাংলাদেশ শিবিরে। দলীয় ১৪৩ রানে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশের সামনে এখন ভরসা অধিনায়ক আকবর আলী। তার সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন রকিবুল।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ৩৭ ওভারে ৭ উইকেটে ১৪৯ রান সংগ্রহ করেছে। জয়ের জন্য ৭৮ বলে প্রয়োজন আর মাত্র ২৯ রান। ঠিক ওই সময় ভারতের সংগ্রহ ছিল ১৪২ রান। অর্থাৎ, টাইগাররা ৭ রানে এগিয়ে রয়েছে। বৃষ্টি বা অন্য কোনো কারণে ম্যাচ শেষ না হলে ডিএলএস পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ৭ রানে জিতবে বাংলাদেশ।
১৭৮ রান করলেই বিশ্বকাপ ট্রফি নিশ্চিত। এমন সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। উদ্বোধনীতে পারভেজ হোসেন ইমনের সঙ্গে ৮.৫ ওভারে ৫০ রানের জুটি গড়তেই বিপদে পড়ে যান তানজিদ হাসান। বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেয়ার আগে ২৫ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান করে ফেরেন তরুণ এ ওপেনার।
উড়ন্ত সূচনার পরও সময়ের ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে যায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।৬৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে এক ঘরে হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ভারতীয় লেগ স্পিনার রবি বিষ্ণুর বল খেলতেই পারছিলেন না বাংলাদেশি যুবারা। নিজের করা প্রথম ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে বাংলাদেশের ৩ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরান ১৯ বছর বয়সী ভারতীয় এ লেগ স্পিনার। দলীয় ৬৫ রানে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে আউট হয়ে ফেরেন শাহাদাত হোসেন।
রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রমে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলী।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপদে পড়ে যায় ভারতীয় যুব দল। দলীয় ৯ রানে ভারতীয় ওপেনার দিব্বাংশ সাক্সেনাকে সাজঘরে ফেরান অভিষেক দাস।
এরপর তিনে ব্যাটিংয়ে নামা তিলক ভার্মাকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামত করেন যশস্বী জসওয়াল। এই জুটিই বেশি ভুগিয়েছে বাংলাদেশি যুবাদের। দ্বিতীয় উইকেটে ৯৪ রানের জুটি গড়েন জসওয়াল ও ভার্মা। তিলক ভার্মাকে আউট করে জুটির বিচ্ছেদ ঘটান তানজিম হাসান সাকিব। দলীয় ১০৩ রানে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন তিলক ভার্মা। তার আগে ৬৫ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ৩৮ রান করেন তিনি।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে ফেরান বাংলাদেশি যুবারা। ভারতীয় অধিনায়ক প্রিয়াম গার্গকে দ্রুত সাজঘরে ফেরান রাকিবুল হাসান।
ভারতীয় শিবিরে এরপর জোড়া আঘাত হানেন শরিফুল ইসলাম। ইনিংসের শুরু থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে যাওয়া ভারতীয় ওপেনার জসওয়ালকে সাজঘরে ফেরান শরিফুল। তার বলে তানজিম হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন জসওয়াল। তার আগে ১২১ বলে ৮টি চার ও এক ছক্কায় ৮৮ রান করেন ভারতীয় এ ওপেনার।
ব্যাটিংয়ে নেমে কিছু বুঝে ওঠার আগেই শরিফুলের দ্বিতীয় শিকার সিদ্ধেশ বীর। তিনি এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন। পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেন শরিফুল। কিন্তু পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে উইকেটে সাফল্য না পাওয়ায় হ্যাটট্রিক হয়নি তার।
এরপর আসা-যাওয়ার মধ্যেই ছিলেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। ৩৮ বলে ২২ রান করে রান আউটের ফাঁদে পড়েন ধ্রুব জুরেল। ৬ বলে ২ রান করার সুযোগ পান রবি বিষ্ণু। ৭ বলে ৩ রান করে অভিষেক দাসের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন অথর্ব আঙ্কোলেকার। কার্তিক ত্যাগীকে রানের খাতা খুলারই সুযোগ দেননি বাংলাদেশ দলের তরুণ পেসার অভিষেক দাস। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সুশান্ত মিশ্রকে আউট করে ভারতকে ১৭৭ রানে গুটিয়ে দেন তানজিম হাসান সাকিব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ৪৭.২ ওভারে ১৭৭/১০ (জসওয়াল ৮৮, তিলক ভার্মা ৩৮, ধ্রুব জুরেল ২২; অভিষেক ৩/৪০, তানজিদ হাসান সাকিব ২/২৮, শরিফুল হাসান ২/৩১)।
চিত্রদেশ //এস//