গল্প-কবিতা

কানিজ কাদীরের ভ্রমণ কাহিনী ‘মাদুরাই’ (পর্ব-১২)

রকিবুল ও রাফিজা রুম বুঝে পেয়েই আমার রুমে আসল। আমার রুমে বসেই রকিবুল নানা রকম প্ল্যান করা শুরু করলো কোথায় কোথায় যাবে। আমরা ঠিক করলাম আগামী রবিবার কােদাই-ক্যানেল ও কন্যাকুমারী দু’টো সাইটিং প্লেস এর যে কোন একটাতে বেড়াতে যাবো। বেশ রাত হয়ে গেছে তাই ওরা রুমে চলে গেল। রাফিজাকে বলে দিলাম কোন অসুবিধা হলে রিসেপশন এর নম্বর ৯ এ ফোন দিবা।আর যার যার রুমে ইন্টারকম তো আছেই।

ওরা ওদের রুমে চলে গেল। আমি আবার একা আমার জগতে ফিরে এলাম । সেই আম্মার নানা কথা আবার আমায় ঘিরে রাখছে। প্রচন্ড কান্নায় আম্মা! আম্মা! বলে জোরে ডাকতে ইচ্ছা করছে। আমার আম্মা কোথায় চলে গেল! আম্মা শেষ যে একমাস আমার বাসায় ছিলেন সেই সময়ের স্মৃতি আমাকে বেশি দূর্বল করে দিচ্ছে। কেন আম্মাকে আমি আরও সময় দেই নাই।কেন আম্মার ভিতরের না বলা কথাগুলো আমি শুনতে চাই নাই এইভেবে মনটা আমার ভীষণ অস্থির হয়ে উঠছে। হে আল্লাহ তুমি আমার মনকে শান্ত করে দাও। নানাভাবে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করি। তারপর ঘুমিয়ে পড়লাম।১৪ তারিখ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রকিবুল ফোন দিল আপা নীচে কখন যাবেন।রাফিজাকেও ফোন দিল। সবাই একসাথে নাস্তা করলাম। তৈরী হয়ে হাসপাতালে গেলাম। ড: শেঠী পোস্ট অপারেটিভ রুমে বসে প্রি-এনেসে্থেটিক চেকআপ করছিল । ওখানে কিছুক্ষণ বসলাম। ওরা কিভাবে চেকআপ করে দেখলাম। ওদের কাজগুলো খুব সিস্টেমেটিক। সবই কম্পিউরাইজড রেকর্ড করা। কোন হইচই নাই। চীৎকার চেচামেচি নাই । ওদের দেখে মনে হচ্ছে ওদের খুব ধৈর্য্য আছে। ওটিতে ঢুকে
জেনারেল এনেসথেসিয়া দেয়া রুগী মনিটর করলাম। যে সব ওটিতে পেড্রিয়াট্রিক অপারেশন হচ্ছে সে সব ওটিতেও গেলাম। আমার ডাইরীতে নতুন যা যা দেখি বা যে সব সিস্টেম আমার কাছে ভাল লাগে তা সব লিখে রাখি। লগ বুকে এ যেসব প্যাশেন্ট জেনারেল এনেসথেসিয়া দিলাম বা মনিটর করলাম সেগুলো তুলে রাখি। বিকাল চারটায় আবার হাসপাতালে যাই পোস্ট অপারেটিভ প্যাশেন্ট কেমন আছে দেখার জন্য। এভাবেই সময় ধরে ধরে প্রতিদিন রুটিন করে নিলাম। প্রতিদিন একই নিয়মে একই সময় ধরে সব করছি। ১৪ তারিখ রকিবুল ও রাফিজা নিজেরা যেয়েই লাইকো অফিসে কিছুটা ইন্ট্রোডিউস হয়েছে। যদিও ওদের ট্রেনিং শুরু ১৫ তারিখ। ওদেরকেও সমস্ত হাসপাতাল ঘুরিয়ে দেখিয়েছে।
১৭ তারিখ রোববার আমরা প্ল্যান করলাম কন্যাকুমারী যাব না কোদাই-ক্যানেল যাব। (চলবে)


লেখক: কানিজ কাদীর

Related Articles

Back to top button