ঘরমুখো মানুষের ভিড়, করোনা সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা
স্টাফ রিপাের্টার:
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার রোধে দেশে গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হলেও ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড় থামছে না। ঘরমুখো মানুষের ভিড়ের কারণে করোনা সংক্রমণ কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের ভাষ্য, ঈদে ঘরে ফেরির ভিড় থামাতে হবে। আর ঈদের জামাতে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। অন্যথায় ঈদে করোনা আক্রান্ত হতে পারে প্রায় ২ লাখ মানুষ।
এবিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বে-নজীর বলেন, ঈদে মানুষদের যাতায়াত বন্ধ করার জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। আর ঈদের জামাতে দুজন করে ছড়ালেও দুই লাখ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সরকারকে এসব বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। আর ঈদের আগে সারাদেশে যাত্রীবাহী সব পরিবহন চলাচলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
গত ২২ মে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশি বাধা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তাই এখন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহর থেকে মানুষ যার যার বাড়িতে ফিরতে পারবে। কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। সরকার ঘরমুখী মানুষকে বাড়ি যেতে বাধা না দিয়ে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদর দপ্তরকে এ নির্দেশ দিয়েছে।
তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার করোনাভাইরাসকে উপেক্ষা করে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ঘাটে ঈদে বাড়ি ফিরতে মানুষের ঢল দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে ফেরি বন্ধ থাকার পর শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারের জন্য ফেরি চলাচল শুরু হয়। এই ফেরিতে পার করা হচ্ছে ব্যক্তিগত যানও। আর গণপরিবহন বন্ধ থাকলে ছোট পরিবহনে করে মাওয়া ঘাটে আসছেন যাত্রীরা। এরপর ফেরি দিয়ে পার হচ্ছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ফেরির রহিম নামে এক যাত্রী এই প্রতিবেদককে বলেন, মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন বছরের একটি বিশেষ দিন। তাই এই দিনটি পরিবারের সাথে উদযাপন করতে চাই। তাই করোনাকে ভয় না করেই বাড়ি যাচ্ছি।
অন্যদিকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, সদনপুর, শিমরাইল, মোগড়াপাড়া, কাচঁপুর, মেঘনাঘাটসহ সব বাসস্ট্যান্ডেই যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসস্ট্যান্ডগুলোতে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ঘরমুখো মানুষরা ভিড় করছে। আর যাত্রীদের নেয়ার জন্য প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডেই উবার, পাঠাও, মোটরসাইকেল, সিএনজি এবং প্রাইভেটকার দাঁড়িয়ে আছে। আর যাত্রীরা গায়ের সাথে গা লাগিয়ে এসব পরিবহনের করে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছে।
জানতে চাইলে ইসমাইল নামে এক যাত্রী এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রতি বছরই ঈদ পরিবারের সাথে পালন করি। তাই এই বছরও পরিবারের সাথে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্চি। যদিও করোনা সংক্রমণের ভয় রয়েছে। কিন্তু এরপরও আমরা করোনা সংক্রমণের ভয়কে উপেক্ষা করেই বাড়ি যাচ্ছি।
চিত্রদেশ//এল//