প্রধান সংবাদ

একদিনে করোনায় ৭ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত বেড়ে ৪১৮৬

স্টাফ রিপোর্টার:
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ৪১৪ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪১৮৬। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন আরো ৭ জন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ১২৭। মারা যাওয়া সাত জনের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা। তারা সবাই ঢাকার বাসিন্দা।

গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৬ জন সুস্থ হয়ে ওঠায় এ পর্যন্ত মোট ১০৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের পরীক্ষা জন্য ৩ হাজার ৯২১টি নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে পরীক্ষা করা হয়েছে ৩ হাজার ৪১৬টি নমুনা। দেশে সর্বমোট করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৯০ বার।

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

এ সময় যুক্ত হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, যারা দেশবাসীর পাশে বিভিন্ন দাঁড়িয়েছেন তাদের সবার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

বুলেটিনে মন্ত্রী বলেন, শিগগির ২ হাজার চিকিৎসক ও ৬ হাজার নার্স নিয়োগ দেয়া হবে। বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন করে এই ৮ হাজার চিকিৎসক-নার্স নিয়োগ দেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, বিভিন্ন খবরের কাগজে ও গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, ভিআইপিদের জন্য আলাদা হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে- এ বিষয়টি সঠিক নয়। সরকার এরকম কোনো ধরনের ব্যবস্থা করেনি। সবার জন্যই একই হাসপাতাল ও একই চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কেউ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের বিবৃতি দেবেন না। যার কারণে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। যা সরকারি নীতিবহির্ভূত।

কোনো হাসপাতাল লকডাউন হয়নি জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, কোনো হাসপাতালই লকডাউন করা হয়নি এবং হবে না। অন্যান্য হাসপাতালে স্বাভাবিক চিকিৎসা বজায় আছে এবং থাকবে। আমাদের সকল হাসপাতালে যেসব ওষুধ সরকার দিয়ে থাকে, সেগুলো সরবরাহ এখনো অব্যাহত রয়েছে এবং সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

বুলেটিনে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

তথ্যমতে, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৫৮টিতেই করোনা রোগী পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকা জেলায়। যেখানে মোট রোগীর প্রায় ৭৩ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে। ঢাকার চার জেলার মধ্যে পর্যাক্রমে সংক্রামণে হার বেশি নায়ারণগঞ্জে। এরপর রয়েছে গাজীপুর। গাজীপুরের পর সংক্রামণের হারে এগিয়ে কিশোরগঞ্জ এবং চতুর্থ জেলা নরসিংদী।

ঢাকা সিটির যেসব জায়গায় সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে:

১) রাজারবাগ

২) মোহাম্মদপুর

৩) লালবাগ

৪) যাত্রাবাড়ি

৫) বংশাল

৬) চকবাজার

৭) মিরপুর

৮) উত্তরা

৯) তেজগাঁ

১০) মহাখালী
দেশে মোট করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৩২ শতাংশ মহিলা। ২১-৩০ বছরের মধ্যে সর্বাধিক ২৪ শতাংশ আক্রান্ত রোগী।

গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন (স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩), ৩৩৩ এবং আইইডিসিআরের হটলাইন (১০৬৫৫;০১৯৪৪৩৩৩২২২) ব্যবহার করে পরামর্শ দেয়া হয়েছে ৮৪ হাজার ৫৯০ জনকে। আর সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৩১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৯২ জনকে হট লাইনে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া মোবাইল ফোন ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গত ২৪ ঘণ্টায় পরামর্শ দেয়া হয়েছে ৪০ হাজার ৯২ জনকে। সর্বমোট স্বাস্থ্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে ১৩ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫৫৯ জনকে।

গত ২৪ ঘণ্টায় অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে ৫০ জন চিকিৎসককে এবং সর্বমোট প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৩২৯ জনকে।

বর্তমানে সেচ্ছা ভিত্তিতে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন ৩ হাজার ৬৯৮ জন চিকিৎসক।

প্রসঙ্গত, বিগত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ ছুঁই ছুঁই। মারা গেছেন এক লাখ ৮৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে ৭ লাখ ২২ হাজারেরও বেশি রোগী ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এপ্রিলের শুরু থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ।

 

চিত্রদেশ//এস//

Related Articles

Back to top button