করোনাভাইরাস: আরও ৪০ বাংলাদেশি কোয়ারেন্টাইনে
স্টাফ রিপোর্টার:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনের সংস্পর্শে আসা ৪০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম। সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব এ কথা বলেন।
আসাদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে প্রথম ৩ জন করোনাভাইরাস রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন ইতালি থেকে দেশে ফিরেছেন। তাদের সাথে বিমানে আসা আরও ৪০ যাত্রীকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
এসময় সচিব জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিলে সাংবাদিকেরা জানতে চান—স্কুল-কলেজে সমাগম বেশি হয়। স্কুল-কলেজ কি বন্ধ করা হবে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধের কোনো যুক্তি নেই, ভিত্তি নেই। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
করোনা ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমরা কন্ট্রাক্ট ট্র্যাকিং করি, তারা কোথায় গেছে, কার সঙ্গে মিশেছে, কোন জায়গায় চা খেয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা আক্রান্ত একজনের সংস্পর্শে আসা ৪০ জনকে ট্র্যাক করেছি, তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করেছি। এটা সম্পূর্ণ ডব্লিউএইচও প্রটোকল। যে কার সঙ্গে আমরা ফার্স্ট কন্ট্যাক্ট করব, সেকেন্ডে কাদের সঙ্গে কন্ট্যাক্ট করব, কীভাবে চিহ্নিত করব।
তিনি বলেন, কার সঙ্গে মিশেছে, কোথায় গেছে সে অনুযায়ী তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এটার নির্দিষ্ট সংখ্যা বলতে পারব না। তাদের যত কন্ট্যাক্ট আইডেনটিফাই করেছি সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে রেখেছি।
সচিব আরও বলেন, ৩ স্তরে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যাতে করোনাভাইরাস না ছড়ায়। তখন সাংবাদিকেরা জানতে চান, ইতালি থেকে আক্রান্তরা তাহলে কীভাবে দেশে এলেন? এর জবাবে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস থাকলে সঙ্গে সঙ্গে জ্বর আসবে বা অন্য কিছু হবে তা নয়। ১৪ দিন পর্যন্ত এটির উপসর্গ হিডেন থাকতে পারে। যখন তিনি এসেছেন তখন কিন্তু তার উপসর্গ ছিল না। ফলে আইডেনটিফাই করার ব্যবস্থা নেই, এমনকি স্ক্যানিংয়ে তার জ্বর ধরা পড়বে না। তাদের একটি লোকটর ফর্ম দেয়া হয়েছে, সেখানে সে কীভাবে থাকবে তার তথ্য নেয়া হয়, আর কোনো উপসর্গ দেখা দিলে চলে আসবেন সেটি বলা হয়। আমরা সে ক্ষেত্রে তাদের মোবাইল ট্র্যাকিং করি। তারা কোথায় থাকল, কি করেছে এগুলো জানি। আবার তারাও হটলাইনে যোগাযোগ করে জ্বর, কাশি হলে। এভাবে ১০০ জনকে আমরা টেস্ট করেছি যাদের এই উপসর্গ ছিল। তাদের মধ্যে এই দুজন যারা বিদেশ থেকে এসেছিল তাদের শরীরে ধরা পড়ছে।
বিদেশ থেকে আসার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ দেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেসব দেশে বেশি আক্রান্ত হয়েছে সেসব দেশ থেকে যেন কম আসে। এমনকি আমাদের যারা সে দেশে আছে তাদের যাতায়াত রেস্ট্রিক্টেড করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। এদের মধ্যে যেসব দেশে বেশি প্রাদুর্ভাব তাদের অন অ্যারাইভাল ভিসা স্থগিত করেছি। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আমরা পরামর্শ দিয়েছি।
এদিকে করোনাভাইরাসের কারনে কাতার ও কুয়েত বাংলাদেশি যাত্রীদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গন্তব্য দুটিতে চালানো সব ফ্লাইট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এছাড়া বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় যাত্রী সংকট তৈরি হওয়ায় সারা বিশ্বে চালানো ১৪২টি ফ্লাইটের মধ্যে ৭৪টি আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
চিত্রদেশ //এফ//