প্রধান সংবাদরাজনীতি

সিটি নির্বাচন: ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে; প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণাও বাড়ছে। রাজধানীতে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন প্রার্থীরা। বুধবার সকাল থেকেও ঢাকা শহরে প্রচার-প্রচারণায় নামেন প্রার্থীরা।

রাজধানীর মধ্য বাড্ডা থেকে প্রচারণা শুরু করেন বিএনপি মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। নির্বাচনি প্রচারে বাধা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারের অভিযোগ করেন তাবিথ।

প্রতিদিন নতুন নতুন পদ্ধতিতে প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তাবিথ আউয়াল বলেন, এতোদিন বিএনপি প্রার্থীদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হতো। এখন মাইক কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। পোস্টার না লাগাতে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। হামলা করা হচ্ছে। অনেককে গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী বলেন, প্রচারের আর ১২ দিন বাকি আছে। এই সময়ে যেন সব প্রার্থী সমানভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারেন ইসিকে সে ব্যবস্থা করতে হবে।

তাবিথ আউয়াল বলেন, এই এলাকার জলাবদ্ধতা ও সরু এলাকায় যানজট নিরসনে কাজ করবো। নারী শিশুসহ সকলের নিরাপত্তায় কাজ করবো। খোলা জায়গায় হাঁটার ব্যবস্থা করা হবে।

আতিকুল ইসলাম চা বানিয়ে প্রচারণায় জনগণকে আকৃষ্ট করছেন আপনি এ রকম কিছু করবেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, ওটা ওনার ব্যাপার। আমি জনগণের কাছে যাচ্ছি। ভোট চাচ্ছি। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। জনগণ ভোট দিতে পারলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত।

ঢাকা উত্তরের এই মেয়র প্রার্থী বলেন, বয়স্ক মানুষ, কর্মজীবী নারী-পুরুষ যাতে রাতের বেলা চলাচল করতে পারে সেজন্য সড়কে লাইটিং ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো। দিনের বেলায়ও মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।

এদিকে ফার্মগেট আলা রাজি হাসপাতালের সামনে পথসভা দিয়ে প্রচারণা শুরু করেন উত্তরের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। প্রচারণার কারণে যেন জনদুর্ভোগ না হয় এ নিয়ে সমর্থকদের সজাগ থাকার আহবান জানান তিনি।

এসময় আতিকুলের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন তারকারাও। চিত্রনায়ক রিয়াজ, নায়িকা বাঁধন, তারানা হালিম, সাবেক ফুটবলার কায়সার হামিদসহ সেলিব্রিটিরা আতিকুলের পক্ষে ভোট চান এবং পথচারীদের কাছে ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ করেন।

এছাড়া ঢাকা দক্ষিণে ধোলাইর পাড় থেকে বেলা ১২টার দিকে ভোটারদরে কাছে দোয়া ও ভোট চাওয়া শুরু করেন শেখ ফজলে নূর তাপস। এসময় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি যেন লঙ্ঘন না হয়, সেদিকে আমরা ও আমাদের নির্বাচনী মনিটরিং কমিটি লক্ষ্য রাখছে।

তাপস বলেন, আচরণবিধি যেন লঙ্ঘন না হয় আমরা সেই চেষ্টা করছি। আমাদের সিটি কর্পোরেশনের মনিটরিং কমিটিও চেষ্টা করছে। আমাদের থানা ও ওয়ার্ডে যে পরিচালনা কমিটি রয়েছে তারাও এটি লক্ষ্য রাখছে। আমি যেখানে যাচ্ছি সেখানে নেতাকর্মীদের সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করার নির্দেশ দিচ্ছি, যেন জনভোগান্তির সৃষ্টি না হয়। যেখানেই আমরা খবর পাচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিচ্ছি। আমরা আরও সচেতনভাবে লক্ষ্য রাখবো জনগণের যেন কোনো ভোগান্তি না হয়।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে নেতাকর্মীসহ জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নেমে পড়েছে। নির্বাচনে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তাতে হয়তো কিছুটা জনগণের অসুবিধা হতে পারে। নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আশা করি, নির্বাচনে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ উৎসবমুখর ভোট হবে।

ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে তাপস বলেন, আমি সত্যি অনেক দুঃখিত বিষয়টির জন্য। পঞ্জিকা অনুযায়ী হয়তো নির্বাচন কমিশনের ভুল হয়ে গেছে। তারপরেও আমরা তাদের (সনাতন ধর্মালম্বী) প্রতি সহানুভূতিশীল। যেহেতু নির্বাচনে তারিখ নির্ধারিত হয়ে গেছে তাই আমাদের গণসংযোগ চালিয়ে যেতে হবে।

বিজয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তাপস বলেন, গত ৫ দিন ধরে আমরা যে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছি তাতে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আমাদের ঢাকার উন্নয়নের দেওয়া পাঁচ দফা উন্নয়ন পরিকল্পনা জনগণ সাদরে গ্রহণ করেছে। আমরা বিশ্বাস করি আগামী ৩০ তারিখে বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় হবে। দায়িত্ব পাওয়ার প্রথম দিন থেকেই আমরা কাজ শুরু করবো একটি উন্নত ঢাকা গড়তে।

দিনব্যাপী শ্যামপুর ও কদমতলী থানায় ব্যারিস্টার তাপস নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন।

অন্যদিকে দুপুরে রাজধানীর পান্থপথ এলাকায় প্রচারণা শুরু করেন দক্ষিণ সিটিতে (ডিএসসিসি) বিএনপির মেয়রপ্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। এসময় তিনি বলেন, আমাদের সমস্ত পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে। যারা পোস্টার লাগাতে চাচ্ছেন, তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। মারধর করা হচ্ছে। থানা-পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েও ফল পাচ্ছি না।

 

চিত্রদেশ//এস//

Related Articles

Back to top button