মো: মেহেবুব হকে কবিতা ‘কেউ প্রেমে পড়েনি’
ছোটবেলায় পাশের বাড়ির মেয়ে রুনা
বর-বউ খেলতে খেলতে বলেছিল,
বড় হও ভাইয়া বড় হও-
তোমাকে নিয়ে আমি একদিন
কাশফুলের বন দেখতে যাবে।
বড় হতে হতে উনিশ বছর পেরিয়ে গেল,
কিন্তু রুনা আমার প্রেমে পড়েনি।
কলেজের জীবনে মোনালিসা ক্যাম্পাসে
কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে কথা দিয়ে বলেছিল,
আমি সারাজীবন তোমার দুহাত ধরে থাকতে চাই।
কলেজজীবনের শেষদিনে আমি আর তাকে খুঁজে পাইনি।
মোনালিসার মেকি প্রেম আমি কোনোদিনই বুঝিনি।
স্বপ্নময় ভার্সিটির ক্যাম্পাসজীবনে বইয়ের পোকা ছিলাম,
কোনো নারীর ছলনা, মোহ আমাকে পরাস্ত করতে পারেনি।
কিন্তু ভার্সিটির কনভোকেশনে যেদিন গোল্ড মেডেল পেলাম-
ববিতা আমাকে পাশে ডেকে নিয়ে বলেছিল,
বিসিএস ক্যাডার হয়ে বাড়িতে প্রস্তাব দিও;
আমি তোমার অপেক্ষায় থাকব।
জাতীয় মেধায় ত্রিশতম হয়ে
বিসিএস ক্যাডারে যোগ দিলেও ববিতার কোনো সাড়া পাইনি।
ববিতার বান্ধবী কণার কাছ হতে জানতে পারলাম,
মাসছয়েক আগে সে বিয়ে করে-
স্বামীর হাত ধরে কানাডা পাড়ি জমিয়েছে।
ববিতার চোখেমুখে ছিল বেঈমানির ছাপ,
কিন্তু আমি কিছুই বুঝতে পারিনি।
আর কতকাল ঠকব আমি।
প্রেমহীন এ জীবনে কারো প্রতি বিশ্বাসের লেশমাত্র রইল না।
কর্মজীবনে ঢাকায় পোস্টিঙে থাকার সময়
সাবনূরের সাথে পরিচয় হয়েছিল
দিয়েছিল, তার চাকরির বয়স একবছর হলে-
বাড়িতে আমার বিষয়ে কথা বলবে।
আজ তার মোবাইল বন্ধ!
সাবনূরের এক নিকটতম কলিগের কাছ থেকে জানতে পারলাম
তার সাত বছরের পুরানো প্রেম জয় ফিরে এসেছে।
শেষপর্যন্ত সাবনূরের প্রেমও আমার ভাগ্যে জোটেনি।
আর কত নারীর ছলনা খেলা দেখতে হবে আমায়?
শেষপর্যন্ত কোনো নারীর প্রেমমাল্য আমার ভাগ্যে জুটল না।
ভালোবাসার নীল পদ্ম, লাল পদ্ম, শ্বেত পদ্ম
কোনোকিছুই পেলাম না এ জীবনে।
শূন্য হৃদয় আমার, নিঃস্ব, রিক্ত আমি
তবু আমি চেয়ে আছি কোনো এক মানবীর খোঁজে।
ভাগ্যের খেলায় কী আছে আমি জানি না।
তবুও আশায় বুক বেঁধে আছি আমি।
পঁয়ত্রিশটি বসন্ত পেরিয়ে গেল-
কিন্তু কেউ আমার প্রেমে পড়েনি।
হয়তো কেউ কোনোদিন আমার প্রেমে পড়বে না।