টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ: ভারতকে উড়িয়ে ফাইনালে ইংল্যান্ড
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ফাইনালের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল আগেই। গতকাল বাবর আজমের দল নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পা দিয়ে রেখেছিল। কিন্তু আজ ভারত সেই পথে হাঁটতে পারল না। ইংল্যান্ডের দুই ওপেনারের কাছে পাত্তা পেল না রোহিত শর্মার দল। ফলে ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে ২৪ বল ও ১০ উইকেট হাতে রেখেই ফাইনালে উঠে গেল ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন ইংলিশরা।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) অ্যাডিলেড ওভালে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান করেছিল ভারত। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে ১৬ ওভারেই বিনা উইকেটে ১৭০ রান করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেল জস বাটলারের দল। এই জয়ে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসরের ফাইনালে উঠে গেল তারা।
আগামী রোববার (১৩ নভেম্বর) শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে খেলাটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়।
আজ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারতের দেওয়া ১৬৯ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার বাটলার ও হেলস পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই ৬৩ রান তুলে ফেলেন। শুরুতে বাটলার বেশি আক্রমণাত্বক হলেও পরে তিনি দেখেশুনে ব্যাটিং করেন।
পরে বাটলার থামলেও আরেক ওপেনার হেলস ঝোড়ো ব্যাটিং করতে থাকেন। যার ফলে মাত্র ২৮ বলে ৫ ছক্কা ও এক বাউন্ডারিতে ফিফটি তুলে নেন হেলস। এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর খোলস থেকে বের হন বাটলারও। তিনিও তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি।
যার ফলে ভারতীয় বোলারদের নাস্তানুবাদ করে ছাড়ে এই জুটি। শেষ পর্যন্ত ১৬ ওভারেই বিনা উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যান তারা। বাটলার ৪৯ বলে ৯ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৮০ ও অ্যালেক্স হেলস ৪৭ বলে চার বাউন্ডারি ও ৭ ছক্কায় ৮৬ রানে অপরাজিত থাকেন। ভারতের বোলারদের মধ্যে কেউই ইংলিশদের কোনো উইকেট তুলে নিতে পারেননি।
এর আগে টস হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৫ রানে লোকেশ রাহুলের বিদায়ে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ফলে সেই ধাক্কা সামাল দিতে ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়ান বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মা জুটি। তবুও পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩৮ রানের বেশি করতে পারেনি ভারতীয়রা।
দ্বিতীয় উইকেটে কোহলির সঙ্গে ৪৭ রানের জুটি গড়েন রোহিত। সুযোগ ছিল পাকিস্তানি ব্যাটার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের সর্বোচ্চ ৫টি ফিফটির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার। তবে রোহিতকে ফিরিয়ে সে জুটি ভাঙেন ক্রিস জর্ডান।
বড় স্কোর করতে পারেননি বর্তমান সময়ের সেরা ব্যাটার সুর্যকুমার যাদবও। ১০ বলে সমান ১টি করে চার-ছক্কায় ১৪ রান করে ফিরেছেন আদিল রশিদের বলে।
চতুর্থ উইকেটে হার্দিক পান্ডিয়াকে নিয়ে বড় জুটি গড়েন কোহলি। দলীয় একশো রান পার হওয়ার সাথে সাথে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে ৪০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন কোহলি। পরে ধারাবাহিক ফর্মে থাকা কোহলি আজও ফিফটি তুলে নেন। তবে ৪০ বলে পূর্ণ ৫০ রান করে ফেরেন এই ব্যাটিং জিনিয়াস।
শেষদিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন হার্দিক পান্ডিয়া। তার ৩৩ বলে ৫ ছক্কা ও ১ বাউন্ডারিতে ৬৩ রানের ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান করেছিল ভারত।
বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের পক্ষে ক্রিস জর্ডান ৩ উইকেট পান। এ ছাড়া ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদের শিকার একটি করে উইকেট।