প্রধান সংবাদস্বাস্থ্য কথা

বরগুনায় ডায়রিয়ার প্রকোপ

বরগুনা প্রতিনিধি :
বরগুনায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। হাসপাতালের ধারণক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। ফলে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত বেড না থাকায় হাসপাতালের মেঝেতে থাকছে ডায়রিয়া রোগীরা। বর্তমানে অবস্থা এমন হয়েছে মেঝেতে জায়গা না পেয়ে বারান্দায় চলছে চিকিৎসা।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ দিনে বরগুনা সদর হাসপাতালে ২৬৪ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ১১১ জনই শিশু। গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৭ জন। এ নিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট ভর্তি আছেন ৪০ জন।

রোববার সকালে বরগুনা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৩টি বেড থাকলেও রোগী ভর্তি আছে ৪০ জন। বেড না থাকায় অপরিচ্ছন্ন মেঝেতে গাদাগাদি করে থাকছেন রোগীরা। কেউ আবার সিঁড়ির নিচে ঝুঁকিপূর্ণ জেনারেটরের পাশে চাদর বিছিয়ে বেড বানিয়ে নিয়েছেন। ইলেক্ট্রনিক সুইচের সঙ্গে ঝুলিয়েছেন স্যালাইন। কেউ কেউ টয়লেটের সামনে জায়গা নিয়েছেন। এতে রোগীর সঙ্গে থাকা স্বজনরাও আছেন ডায়রিয়া ঝুঁকিতে।

আশিষ, সেলিম, ইব্রাহীমসহ কয়েকজন রোগী বলেন, হাসপাতালে বেড না থাকায় আমাদের অস্বাস্থ্যকর মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। আমরা হাসপাতালে আসি সুস্থ হতে, কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে সুস্থ না বরং আরও অসুস্থ হচ্ছি।

আরেক রোগী গোলাম মাওলা বলেন, এখানে পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। বেড তো নেই, মেঝেতেও জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে আমাদের। তার ওপরে এখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। নেই কোনো ফ্যান। ফলে গরমে আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।

রোগীর স্বজনরা বলেন, শয্যা সংকট থাকায় মেঝেতে চাদর বিছিয়ে থাকতে হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বাড়ায় হাসপাতালের মেঝেতেও এখন ঠাঁই মিলছে না। হাসপাতাল থেকে শুধু মাত্র স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আর কোনো ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না রোগীদের।

বরগুনা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহরাব হোসেন বলেন, গরমের মৌসুম শুরু হওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। হাসপাতালে জনবল কম থাকায় আমরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। রোগীদের যে পরিমাণ যত্নের প্রয়োজন আমরা শতভাগ না পারলেও সাধ্যমতো চেষ্টা চালাচ্ছি। গত মাসের তুলনায় বেশি সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে।

বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে হাসপাতালে শয্যা ও জনবল সংকটের বিষয় কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি। তারা শিগগিরই এর ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করছি।

চিত্রদেশ//এফ টি//

 

Related Articles

Back to top button