টেকসই মাটি ব্যবস্থাপনায় বিজ্ঞানভিত্তিক নীতি প্রণয়ন করতে হবে
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টেকসই মাটি ব্যবস্থাপনার জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
রবিবার ‘বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস-২০২১’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
লবণাক্ত মাটির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য উদ্ভাবিত টেকসই প্রযুক্তিসমূহের ব্যবহারও প্রচার করতে হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন,‘ আমাদের কৃষি ও পরিবেশের উপর লবণাক্ত মাটির বিারূপ প্রভাব সম্পর্কে গবেষক, বিজ্ঞানী, শিক্ষক, কৃষক সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে। মাটির অবক্ষয় কিভাবে সর্বোত্তম উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নির্ধারণের জন্য লবণাক্ত মাটি সম্পর্কে আরো বিশদ জ্ঞান অর্জনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস’ পালিত হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘লবণাক্ততা রোধ করি, মাটির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করি’- যা দেশের উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকার বর্তমান প্রেক্ষাপটে যথাযথ হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা লবণাক্ততায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা মোট ফসল উৎপাদনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। মাটির লবণাক্ততা সমস্যা বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের কৃষি বিজ্ঞানীদের নিকট উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট- এর বিজ্ঞানীরা মাটির লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনা কৌশল নিয়ে ক্রমাগত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৫৩ শতাংশ জমি সরাসরি লবণাক্ততায় আক্রান্ত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে মাটির লবণাক্ততা সমস্যা উপকূলীয় এলাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ২০০৯ সালের জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের প্রায় ১.০৫৬ মিলিয়ন হেক্টর আবাদযোগ্য জমি বিভিন্ন মাত্রার লবণাক্ততা দ্বারা আক্রান্ত। ইতিমধ্যে, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের লবণাক্ত ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীগণ লবণাক্ত এলাকায় ফসল উৎপাদনের জন্য বেশ কিছু প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন, যা কৃষক পর্যায়ে সাম্প্রসারিত হচ্ছে। লবণাক্ততার করণে এই এলাকার ফসলের নিবিড়তা মাত্র ১৮৯ শতাংশ। শুষ্ক মৌসুমে এ এলাকার অধিকাংশ জমি পতিত থাকে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কৃষি উন্নয়নে সব সময় আন্তরিক। সফল উৎপাদন বাড়াতে ভর্তুকি মূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্যও ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে। কৃষিতে আমাদের অগ্রগতি অভূতপূর্ব। কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের কৃষি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তিনি ‘বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস-২০২১’ -এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।- বাসস
চিত্রদেশ//এফটি//