দেশের পুলিশ জনবান্ধব, শিশু বান্ধব, নারী বান্ধব
স্টাফ রিপোর্টার:
কমিউনিটি পুলিশের সাফল্য কথা উল্লেখ বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘জনগণের সঙ্গে মেল বন্ধনের কারণে আমরা ইতোমধ্যে অনেক জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ করতে পেরেছি। তিনি বলেন,আমাদের দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়, তারা রক্তপাত পছন্দ করেন না, কলহ পছন্দ করেন না। আমাদের দেশের পুলিশ জনবান্ধব, শিশু বান্ধব, নারী বান্ধব।
শনিবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে অবস্থিত শহীদ শিরু মিয়া মিলনায়তনে ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আইজিপি এসব কথা বলেন।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং বাংলাদেশে নতুন ধারণা হলেও এশিয়ার অনেক দেশে এটা একটি পুরাতন ধারণা। সিঙ্গাপুরেও এ পদ্ধতি বেশ প্রচলিত। আমেরিকায় যখন সাদা আর কালো দাঙ্গা বাঁধতো তখনও তারা কমিউনিটি পুলিশিং পদ্ধতি শুরু করে সাফল্য পায়।
অপরাধের ভীতিমূক্ত সমাজ বির্নিমাণের গুরুত্ব উল্লেখ করে পুলিম মহাপরিদর্শক বলেন, ‘আমাদেরকে এমন এক সমাজ তৈরি করতে হবে যেখানে অপরাধ থাকবে না, এজন্য সামগ্রিকভাবে সমাজ সম্মেলন করতে হবে। সমাজের সঙ্গে, নাগরিকের সঙ্গে পার্টনারশিপ পুলিশিং গড়ে তুলতে হবে’।
কমিউনিটি পুলিশের সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে মেল বন্ধনের কারণে আমরা ইতোমধ্যে অনেক জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ করতে পেরেছি। আমাদের দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়, তারা রক্তপাত পছন্দ করেন না, কলহ পছন্দ করেন না। আমাদের দেশের পুলিশ জনবান্ধব, শিশু বান্ধব, নারী বান্ধব।
আইজিপি বলেন, সনাতন অপরাধ কমলেও টেকনোলজি বৃদ্ধির পাশাপাশি সাইবার অপরাধ বাড়ছে। আমরাও টেকনোলজি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে এ দেশকে রক্ষা করবো, জনগণকে রক্ষা করবো, এর বিরুদ্ধে আমরা ইস্পাতসম প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।
এসময় শিক্ষাবিদ ও কলাম লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমি যেন একটি তীর্থস্থানে এসেছি। এটি এমন এক জায়গা যেখান থেকে পাকিস্তানি আর্মির বিরুদ্ধে প্রথম বুলেটটি ছুড়ে প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলা হয়েছিল।
পুলিশ পরিবারের এ সন্তান মুক্তিযুদ্ধে তার বাবার আত্মত্যাগ স্মরণ করে বলেন, ‘অন্যদের সঙ্গে আমার বাবা যখন পাকিস্তানি আর্মিদের গুলি খেয়ে পানিতে তিন দিন ধরে পঁচে ভাসছিলো, তাকে যখন ধরার অবস্থাও ছিলো না, শুধুমাত্র তার গায়ে পুলিশের ইউনিফর্ম থাকার কারণে স্থানীয় জনগণ তাকে কবরস্থ করে। এজন্যই আমাদের দেশের পুলিশকে তার সংশ্লিষ্ট কমিউনিটির মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে, সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকতে হবে। প্রাথমিক স্কুল থেকেই শিশুদের অনুপ্রাণিত করতে হবে। তাহলেই বাল্য বিবাহসহ ইভটিজিংয়ের মতো সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে’।
করোনার সময় পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা ও শূন্য দিয়ে গুণের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের অনেক সাফল্য আছে। মাঝে মাঝে দুএকটি খারাপ কাজ সকল অর্জনকে নষ্ট করে দেয়, এজন্য সর্বোপরি সকলকে ভাল মানুষ হতে হবে।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, আপনার এলাকায় কী সমস্যা, তা চিহ্নিত করে আপনার থানার কমিউনিটি পুলিশ অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে সে সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায় তা হলো কমিউনিটি পুলিশিং। আমরা সকলে এই সমাজেরই লোক, আমরা যদি একজনের পাশে না দাঁড়াই তাহলে এ সমাজ টিকবে না, রাষ্ট্র টিকবে না।
কমিশনার বলেন, আমার পুলিশের দুটো চোখ দিয়ে যা দেখা যায় না, কমিউনিটির শত শত চোখ দিয়ে তার চেয়ে বেশি দেখা যায়। জনগণ ও পুলিশ এক সঙ্গে কাজ করে ইভটিজিং, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি সুস্থ সমাজ গড়তে পারি।
মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, যেকোন জাতীয় দুযোর্গে আমরা আপনাদের পাশে আছি, আপনারাও আমাদের সঙ্গে থাকলে অপরাধমুক্ত, অপরাধভীতিমুক্ত একটি সমাজ গড়ে তুলবো।
চিত্রদেশ//এফটি//