ক্যাচ মিসে ম্যাচ মিস! সিরিজ জিতল নিউ জিল্যান্ড
স্পোর্টস ডেস্ক :
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে নিউ জিলান্ড। এ জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিল স্বাগতিকরা।
ক্রাইস্টচার্চে নিউ জিল্যান্ডের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ২৭১ রান তোলে। জবাবে অধিনায়ক টম ল্যাথামের সেঞ্চুরিতে জিতে যায় নিউ জিল্যান্ড। দুই দলের ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় ম্যাচটি শুরু হয়।
স্কোর: নিউ জিল্যান্ড ২৭৫/৫ (৪৮.২ ওভার)
বাংলাদেশ ২৭১/৬ (৫০ ওভার)
বাজে ফিল্ডিংয়ের খেসারত দিল বাংলাদেশ
ক্রাইস্টচার্চের সেঞ্চুরিয়ান টম ল্যাথামকে ৪টি সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। তার ব্যাটে সেঞ্চুরি না আসলে অপরাধই হতো! বাংলাদেশের দেওয়া সুযোগগুলোকে কাজে লাগালেন কিউই অধিনায়ক। ১১০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন। জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লেন। শুধু ল্যাথাম নয়, বাংলাদেশ সুযোগ দিয়েছে ৩০ রান করা জিমি নিশামকেও। আরেক হাফ সেঞ্চুরিয়ান ডেভিন কনওয়েও নিশ্চিত রান আউট থেকে বেঁচেছেন ইনিংসের শুরুতেই। স্কোরবোর্ডে ভালো পুঁজি নিয়ে একের পর এক সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ডকে হারানোর সূবর্ণ সুযোগ নষ্ট করলো। বাজে ফিল্ডিংয়ের খেসারত দিল।
পারল না বাংলাদেশ
জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১ রান। সাইফউদ্দিনের বল ল্যাথাম পাঠালেন বাউন্ডারিতে। কিউই অধিনায়ক নিশ্চিত করলেন দলের জয়। জিতে নিলেন ওয়ানডে সিরিজ। প্রবল লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত পরাজয় এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যান ও বোলারদের পারফরম্যান্স ছিল আঁটসাঁট। কিন্তু বাজে ফিল্ডিংয়ে ম্যাচ হাতছাড়া হলো।
নিশামকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন মোস্তাফিজ
নিশাম ও ল্যাথামের ৭৬ রানের জুটি ভেঙে ম্যাচে রোমাঞ্চ ফেরালেন মোস্তফিজ। নিজের তৃতীয় স্পেল করতে এসে মোস্তাফিজ ফেরালেন নিশামকে। তাসকিনের বলে ৩ রানে মুশফিকের হাতে জীবন পাওয়া নিশাম ফিরলেন ৩০ রানে। সীমানায় তার ব্যাট নেন সৌম্য। নিশামের আউটের সময় নিউ জিল্যান্ডের রান ৫ উইকেটে ২৪২।
ল্যাথাম-নিশাম জুটির পঞ্চাশ
মাত্র ৪৪ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েছেন ল্যাথাম ও নিশাম। তাদের জমাট জুটিতে জয় দেখতে পারছে নিউ জিল্যান্ড। বাংলাদেশের বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করলেও বাজে ফিল্ডিংয়ে ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার পথে। ৪৮ বলে নিউ জিল্যান্ডের দরকার ৫২ রান। হাতে আছে ৬ উইকেট। বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরতে অন্তত ২টি উইকেট দ্রুত সময়ে পেতেই হবে।
৯ বলে তিন ক্যাচ মিস!
৩৭ ও ৩৮তম ওভারে তিনটি ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমকে দিয়ে শুরু। এরপর মিথুন ও মাহেদী জীবন দিলেন নিশাম এবং ল্যাথামকে। তাসকিনের বলে উইকেটের পেছনে নিশামের ক্যাচ ছাড়েন মুশফিক। সহজ ক্যাচ। ডানহাতি পেসারের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নিশাম। বামদিকে ঝাপিয়েও মুশফিক ক্যাচ নিতে পারেননি। এক বল পরই ল্যাথাম তাসকিনের বলে কভারে ক্যাচ তুলেন। তুলনামূলক কঠিন ক্যাচ হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসব ক্যাচ হরহামেশাই হয়ে যায়। মিথুন জমাতে পারেননি বল। পরের ওভারে মাহেদী হাসান নিজের বোলিংয়ে জীবন দেন ল্যাথামকে। ডানহাতি স্পিনারের বলে এগিয়ে এসে ড্রাইভ করেছিলেন। একেবারেই লোপ্পা ক্যাচ যায় মাহেদীর হাতে। কিন্তু বল তার হাতের মুঠো থেকে বেরিয়ে যায়।
রান আউটে জুটি ভাঙলেন তামিম
অতিথি বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিচ্ছিলেন ডেভন কনওয়ে ও টম ল্যাথাম। দুজন ১১৩ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের করা ২৭২ রানের জবাব দিচ্ছিল। বাংলাদেশের জন্য এ জুটি হয়ে উঠছিল গলার কাঁটা। বোলাররা যখন কিছু করতে পারছিলেন না তখন অধিনায়ক তামিম নিজেই দায়িত্বটা নিলেন। সরাসরি থ্রোতে ভাঙলেন জুটি। কনওয়ে রান আউট ৭২ রানে। ৯৩ বলে ৭ বাউন্ডারিতে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নিজের ইনিংসটি সাজান। জয়ের জন্য নিউ জিল্যোন্ডের আরও ১০৬ রান করতে হবে। কনওয়ের আউটের সময় নিউ জিল্যান্ডে রান ৪ উইকেটে ১৬৬। নতুন ব্যাটসম্যান জিমি নিশাম।
ল্যাথাম-কনওয়েতে প্রতিরোধ স্বাগতিকদের
৫৩ রান তুলতে ৩ উইকেট হারিয়েছিল নিউ জিল্যান্ড। চতুর্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন কনওয়ে ও ল্যাথাম। তাদের জমাট জুটিতে প্রতিরোধ পেয়েছে স্বাগতিকরা। এরই মধ্যে জুটির পঞ্চাশ রান পূর্ণ হয়েছে। উইকেটে থিতু হয়ে তারা অনায়াস রান তুলছেন। অবশ্য এ জুটি বড় হবার পেছনে ফিল্ডার তাসকিনেরও ভুল রয়েছে। রান আউটের সূবর্ণ সুযোগ তিনি হাতছাড়া করেছেন। তার থ্রো উইকেট কিপার প্রান্তে না হয়ে বোলিং প্রান্তে হলে নিশ্চিত রান আউট হন কনওয়ে।
পরিকল্পনা করে মিলল সাফল্য
ফাইন লেগে ফিল্ডিং করা তাসকিন ছিলেন বৃত্তের ভেতরে। মাহেদীর বল টার্ণ করে ইয়ংয়ের ব্যাট-প্যাডে আঘাত করছিল বারবার। তামিম তাসকিনকে বৃত্তের বাইরে পাঠিয়ে ব্যাটসম্যানকে সিঙ্গেল নেওয়ার আমন্ত্রণ জানালেন। তাতেই কাজ হলো। উইকেট থেকে সরে গিয়ে সুইপ খেলার চেষ্টা করলেন ইয়ং। বল মিস করে হলেন বোল্ড। দুই ওভারে অফস্পিনারের দুই উইকেট। ইয়ং ১ রানে আউট। তার ফেরার সময় নিউ জিল্যান্ডে রান ৩ উইকেটে ৫৩। নতুন ব্যাটসম্যান টম ল্যাথাম।
নিকোলস সাজঘরে
নবম ওভারে স্পিনার মাহেদী হাসানকে বোলিংয়ে আনেন তামিম ইকবাল। অফস্পিনার তৃতীয় বলে পেয়ে যান সাফল্য। প্রথম ওয়ানডে উইকেট। বাঁহাতি নিকোলস তার হাওয়ায় ভাসানো বল জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড হন। ১৮ বলে ১৩ রান করে আউট নিকোলস। তার আউটের সময় নিউ জিল্যান্ডে রান ২ উইকেটে ৪৩। নতুন ব্যাটসমান উইল ইয়ং।
গাপটিলকে ফিরিয়ে শুরুতেই সাফল্য
বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিলকে ফেরাল বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ার বল লেগ সাইডে ফ্লিক করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করেন। তার ব্যাটের ওপরের দিকে ক্যাচ উঠে। নিজের বোলিংয়ে ফিল্ডিং করে ক্যাচ নেন মোস্তাফিজ। ২৪ বলে ২০ রান করে গাপটিল সাজঘরে ফেরেন। তার আউটের সময় নিউ জিল্যান্ডে রান ১ উইকেটে ২৮। নতুন ব্যাটসম্যান ডেভন কনওয়ে।
কাজটা মোটেও সহজ নয়!
জিততে হলে নিউ জিল্যান্ডকে রেকর্ড গড়তে হবে। কারণ ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে ২৬১ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই।
দ্বিতীয় ইনিংসে এই রানের বেশি রান হলেও জয় পায়নি পরে ব্যাটিং করা দল। স্বাগতিকদের আজ রেকর্ড গড়ার হাতছানি। বাংলাদেশকেও এ পরিসংখ্যান আশা দেখাতে পারে। ২০১৪ সালে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার ম্যাচে কেনিয়ার দেওয়া ২৬১ রান তাড়া করে জিতেছিল স্কটল্যান্ড।
শেষটা রাঙালেন মিথুন
ইনিংসের শুরু থেকে ব্যাটসম্যানরা প্রত্যেকেই ধারাবাহিক ডট বল খেলে যাচ্ছিলেন। ব্যতিক্রমী ছিলেন মিথুন। তার ইনিংসটি ছিল একশর ওপরে স্ট্রাইক রেটে সাজানো। বাংলাদেশের স্কোর বড় হওয়ার পেছনে শেষটায় ছিল তার বিরাট অবদান। ৫৭ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় মিথুন ৭৩ রান করেন। ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১২৮.০৭ স্ট্রাইক রেটে। তামিম ১০৮ বলে করেন সর্বোচ্চ ৭৮ রান। মুশফিক ৫৯ বলে ৩৪, সৌম্য ৪৬ বলে ৩২ রান করেন। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জিং স্কোর পেলেও আরও বেশি রান আসার সুযোগ ছিল। মিথুনের সঙ্গে ৭ রানে অপরাজিত ছিলেন সাইফ উদ্দিন।
এক ছক্কার পর সাজঘরে মাহেদী
৪৯তম ওভারে ট্রেন্ট বোল্টকে লং অন দিয়ে দারুণ ছক্কা হাঁকিয়েছেন মাহেদী হাসান। কিন্তু পরের বলেই ডানহাতি ব্যাটসম্যান সাজঘরে। এবার বাঁহাতি স্লোয়ার বুঝতে পারেননি। মিড অফে ক্যাচ দিয়ে মাহেদী সাজঘরে ফেরেন ৭ রানে। তার আউটের সময় বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ২৫৮। নতুন ব্যাটসম্যান সাইফ উদ্দিন।
পারলেন না মাহমুদউল্লাহ
শেষ দিকে রান বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন ছিল আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের। মিথুন একপ্রান্তে চেষ্টা চালালেও মাহমুদুলউল্লাহ দলের প্রয়োজন মেটাতে পারেননি। ৪৮তম ওভারে জেমিসনের বলে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে গাপটিলের হাতে ক্যাচ দেন। ১৮ বলে ১৬ রান করে মাহমুদউল্লাহ ফেরেন সাজঘরে। তবে পঞ্চম উইকেটে মিথুনের সঙ্গে জুটি গড়তে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি। ৪২ বলে তাদের জুটিতে আসে ৬৩ রান। নতুন ব্যাটসম্যান মাহেদী হাসান।
মিথুনের ষষ্ঠ ফিফটি
নিশামের ফুলটস বল দারুণ কাজে লাগালেন মোহাম্মদ মিথুন। ডিপ মিড উইকেট দিয়ে হাঁকালেন ছক্কা। ৪৭ থেকে তার রান ৫৩। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি পেলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে এটি তার তৃতীয় ফিফটি। ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয়। ৪৩ বলে ফিফটি পেয়েছেন মিথুন। ৪ চার ও ২ ছক্কায় সাজিয়েছেন ইনিংসটি।
মুশফিককে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন স্ট্যানার
মিচেল স্ট্যানারকে মিড অন দিয়ে উড়াতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করলেন মুশফিক। বল গেল হেনরি নিকোলসের হাতে। বৃত্তের ভেতরে থেকে সহজেই ক্যাচ নিলেন নিকোলস। মুশফিক সাজঘরে ফিরলেন ৫৯ বলে ৩৪ রান করে। তামিম আউট হওয়ার পর মুশফিক ও মিথুনের জুটি ছিল ৫১ রানের। মুশফিক আউট হওয়ার সময় বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৮৪। নতুন ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
নিজের উইকেট উপহার দিলেন তামিম
ফিফটির পর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তুলছিলেন তামিম। নিউ জিল্যান্ড বোলারদের জন্য হয়ে উঠছিলেন থ্রেট। তাকে ফেরাতে টম ল্যাথাম বোলিংয়ে এনেছিলেন ম্যাট হেনরিকেও। কিন্তু কাজ হয়নি। দারুণ ব্যাটিংয়ে তামিম এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভুল এক ডাকে সব শেষ। নিশামের বল দেখেশুনে খেলেছিলেন মুশফিক। বল ছিল উইকেটের একদম কাছে। তামিম রান নেওয়ার জন্য কল দেন। মুশফিকও সাড়া দেন। কিন্তু নিশাম নিজের বোলিংয়ে ফিল্ডিং করে তামিমকে রান আউট করেন। পা দিয়ে উইকেট ভাঙেন নিশাম। তামিমের ইনিংসটি শেষ হয় ৭৮ রানে। ১০৮ বলে ১১ চারে ইনিংসটি সাজান তামিম। তার ফেরার সময় বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১৩৩। নতুন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিথুন।
তামিমের ফিফটির ফিফটি
ক্যারিয়ারের ৫০তম ফিফটির স্বাদ পেলেন তামিম। প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে তামিম এমন কীর্তি গড়লেন। ফিফটিতে তামিমের পরেই আছেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের হাফ সেঞ্চুরি আছে ৪৮টি। তামিম ৮৪ বলে ফিফটির দেখা পেয়েছেন। ইনিংসে ছিল ৬টি বাউন্ডারি। ৫০টি হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি তামিমের সেঞ্চুরি আছে ১৩টি। ২১২ ম্যাচে তামিমের এখন পর্যন্ত রান ৭৪৪৫। আজকের হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসটি সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।
ওয়াইড বলে স্টাম্পড সৌম্য
আরেকটি সম্ভাবনাময় ইনিংসের বাজে সমাপ্তি। স্পিনার মিচে স্ট্যানারের বল এগিয়ে এসে গিয়ে স্টাম্পড সৌম্য। বলটি ওয়াইড। পরিকল্পনা করেই মিডল স্টাম্প থেকে বল টার্ণ করিয়ে লেগ স্টাম্পের বাইরে টানেন অফস্পিনার। ৪৬ বলে ৩২ রান করে বিদায় নেন সৌম্য। তার আউট হওয়ার সময় বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৮৫।
ক্যাচ দিয়ে বাঁচলেন তামিম!
১৫তম ওভারের পঞ্চম বলের ঘটনা। কাইল জেমিনসনের লেন্থ বল স্ট্রেইট ড্রাইভ করেছিলেন তামিম। ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার জেমিনসন ক্যাচ লুফে নেন চোখের পলকে। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাস কিউই শিবিরে। অনফিল্ড আম্পায়ার ক্যাচ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য চান। তবে সফট সিগন্যাল দিয়েছিলেন আউট। রিপ্লেতে দেখা যায় জেমিনসন তামিমের ক্যাচ ঠিকমত মুঠোবন্দী করলেও ড্রাইভ দেওয়ার সময় বল মাটির স্পর্শ পেয়েছিল। ফলে তামিম বেঁচে যান।
পঞ্চাশ পেরিয়ে বাংলাদেশ
১৫তম ওভারের প্রথম বল মিড উইকেটে পাঠিয়ে ৩ রান নিলেন তামিম ইকবাল। ৪৯ থেকে বাংলাদেশের রান ৫২। মন্থর গতিতে রান তোলা বাংলাদেশ ১৫তম ওভারে পায় দলীয় পঞ্চাশ রান।
পাওয়ার প্লে’তে নড়বড়ে বাংলাদেশ
ম্যাট হেনরির করা অষ্টম ওভারে তামিম ইকবাল ১২ রান তুলেছিলেন। নয়তো প্রথম পাওয়ার প্লে’তে বাংলাদেশের রান আরও কম হতো। ১০ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ২৬। বৃত্তের সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি অতিথিরা। এ সময়ে বাউন্ডারি এসেছে ৪টি। ৪টিই মেরেছেন তামিম। ডট বলে বেড়েছে চাপ। ১০ ওভারের ৪টি ছিল মেডেন।
রিভিউ থাকায় রক্ষা!
পঞ্চম ওভারের শেষ বল। বোল্টের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল ফ্লিক করতে গিয়ে মিস করেন তামিম। তার প্যাডে লেগে বল যায় উইকেটের পেছনে। ডানদিকে ঝাপিয়ে বল তালুবন্দি করেন কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম। নিউ জিল্যান্ডের উইকেটের আবেদনে আম্পায়ার ওয়েন নাইটস সাড়া দেন। তামিম সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন। রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা যায় বল তামিমের প্যাডে আঘাত পেয়ে ল্যাথামের গ্লাভসে জমা হয়। রিভিউ থাকায় রক্ষা। নয়তো শুরুতেই বিপদ হতে পারত।
জেফ ক্রোর ট্রিপল সেঞ্চুরি
নিউ জিল্যান্ডের হয়ে জেফ ক্রো শেষ খেলেছেন ১৯৯০ সালে। এরপর তিনি ম্যাচ রেফারির ভূমিকায়। বাংলাদেশ ও নিউ জিল্যান্ডের দ্বিতীয় ওয়ানডে দিয়ে ম্যাচ রেফারি হিসেবে ট্রিপল সেঞ্চুরি করলেন জেফ ক্রো। তৃতীয় আম্পায়ার হিসেবে ওয়ানডেতে তিনশ ম্যাচে দায়িত্ব পালন করার কীর্তি গড়লেন তিনি। এর আগে ইংল্যান্ডের ক্রিস ব্রড ও শ্রীলঙ্কার রঞ্জন মাদুগালে ওয়ানডেতে এমন কীর্তি গড়েন।
শুরুতেই লিটনকে হারাল বাংলাদেশ
শুরুটা একদমই বাজে হলো বাংলাদেশের। দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশ হারাল লিটন কুমার দাশের উইকেট। কোনো রান না করেই লিটন সাজঘরে। ম্যাট হেনরির শর্ট বল পুল করতে গিয়ে ইয়ংয়ের হাতে ক্যাচ দেন। ক্যারিয়ারে এটি তার ষষ্ঠ ডাক, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম। লিটন সাজঘরে ফেরার সময় বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৪। নতুন ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার।
টস
টস জিতে নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়ক টম ল্যাথাম বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এক ম্যাচ খেলেই বাইরে হাসান মাহমুদ
প্রথম ওয়ানডেতে ডানেডিনে খেলার সুযোগ হয়েছিল তরুণ হাসান মাহমুদের। দলের ব্যর্থতার দিনে ব্যর্থ ছিলেন ডানহাতি পেসারও। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তার সুযোগ হলো না। দলে এসেছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।
বাংলাদেশ একাদশ
তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিথুন, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহেদী হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফ উদ্দিন ও তাসকিন আহমেদ।
অপরবর্তিত নিউ জিল্যান্ড একাদশ
প্রথম ওয়ানডেতে অনায়াস জয় পাওয়ায় ক্রাইস্টচার্চে কোনো পরিবর্তন আনেনি স্বাগতিকরা। প্রথম ওয়ানডের একাদশ নিয়েই তারা মাঠে নামছে।
নিউ জিল্যান্ড একাদশ
ট্রেন্ট বোল্ট, ডেভন কনওয়ে, মার্টিন গাপটিল, ম্যাট হেনরি, কাইল জেমিসন, টম ল্যাথাম (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), ড্যারিল মিচেল, জিমি নিশাম, হেনরি নিকলস, মিচেল স্যান্টনার ও উইল ইয়াং।
সিরিজ বাঁচানোর লড়াই বাংলাদেশের
প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটে-বলে ন্যূনতম লড়াইও করতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৩১ রানে অলআউট। নিউ জিল্যান্ড ম্যাচ জিতে যায় মাত্র ২১.২ বলে। পুরোপুরি নো কম্পিটিশিন ম্যাচ। আজ সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে বাংলাদেশ সামর্থ্যের সবকুটু উজার করে দিতে চায়। ঘুরে দাঁড়াতে চায়। এজন্য ব্যাটসম্যানদের থেকে বড় ইনিংসের প্রত্যাশায় অধিনায়ক তামিম। সঙ্গে বোলারদের থেকেও চান দ্যুতিময় পারফরম্যান্স। নিউ জিল্যান্ডে বাংলাদেশ এখনও কোনো ম্যাচ জেতেনি বাংলাদেশ। এবার পারবে তো তামিমের দল?
চিত্রদেশ//এসএইচ//