হাড়ক্ষয় রােধে সয়াবিন
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
সয়াবিন খেলে হাড় শক্ত হয়, এ খবর সবারই জানা। বিশেষ করে বয়স্করা বেশি হাড়ের সমস্যায় ভুগে থাকেন। বাতের ব্যথা যাদের; নিয়মিত সয়াবিন খেলে সুফল মেলে। ভরপুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সয়াবিন সব বয়সীদের জন্যই সমান উপকারী।
যাদের কিডনি রোগ রয়েছে তাদের জন্যও সয়াবিন অনেক উপকারী। মাঝবয়সী অনেক নারী হাড়ক্ষয় রোগে ভুগে থাকেন; তাদের জন্যও সয়াবিনের বিকল্প নেই। বিশেজ্ঞদের এমনই মত।
এক পরিসংখ্যানের তথ্যানুযায়ী, সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন ৩০ থেকে ৫০ গ্রাম সয়াবিন ও নিয়মিত সয়ামিল্ক খেলে হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করা যায়। মেনোপজের পর নারীদের হাড়ে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ কমতে শুরু করে। যার ফলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। প্রতিদিনের ডায়েটে ফাইটোইস্ট্রোজেন সমৃদ্ধ সয়াপ্রোটিন থাকলে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি কমে যায়।
ইংল্যান্ডের হাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’বছর ধরে ২০০০ পরিসংখ্যান নেওয়া হয়। মেনোপজ হওয়া এমন নারী যদি নিয়ম করে ৩০ গ্রাম (৬৬ মিলিগ্রাম সয়া প্রোটিন যুক্ত) সয়াবিন টানা ৬ মাস খায়; তবে তার অস্টিওপোরোসিসের মতো হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যা কমে।
গবেষকদলের প্রধান থোজুকাত সাথ্যপালন তার গবেষণাপত্রে বলেছেন, শুধু অস্টিওপোরোসিসের কারণে লাখো মানুষের হাড় ভাঙে। তারা প্রায় পঙ্গু জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। শুধু সয়া প্রোটিন ডায়েট দিয়ে এই সমস্যা অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। পাশাপাশি দরকার নিয়মিত শরীরচর্চা।
ভারতীয় ডায়েটিশিয়ান ইন্দ্রাণী ঘোষের মতে, সয়াবিনে আছে আইসোফ্ল্যাভেন ও লেসিথিন। দু’টিই জোরালো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এগুলো লো ডেনসিটি কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্যে করে। এলডিএল অর্থাৎ লোডেনসিটি কোলেস্টেরল অত্যন্ত ক্ষতিকারক। ধমণির মধ্যে কোলেস্টেরলের পলি জমিয়ে রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয় এই এলডিএল। সয়াবিনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এই সমস্যার মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
সয়াবিন যেভাবে শরীরের উপকার করে-
>> সয়াবিনের আইসোফ্ল্যাভেন অত্যন্ত জোরালো ফাইটো ইস্ট্রোজেন। ত্বক ও চুল উজ্জ্বল ও ঝকঝকে রাখতে এটি সাহায্য করে।
>> সয়াবিনে থাকা লেসিথিন রক্তচাপ স্বাভাবিক রেখে হার্ট ও মস্তিষ্ককে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। এতে অকালবার্ধক্য থেকে মুক্তি মেলে।
>> সয়াবিনের লেথিসিন ফ্যাট মেটাবলিজিম বাড়াতে সাহায্য করে। তাতে ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
>> সপ্তাহে দিন তিনেক ৫০ মিলিগ্রাম করে সয়াবিন খেলে এইচডিএল এবং এলডিএলের ভারসাম্য রক্ষা হয়। ফলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে।
>> ব্রিটিশ জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, খাবার পরিপাকের সময় সয়া-প্রোটিন নামে এক যৌগ তৈরি হয়, যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্যে করে।
>> সয়া-ফাইবার রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে।
>> সয়াবিনে আছে ফাইটিক অ্যাসিড, স্যাপোনিন, আইসোফ্ল্যাভেন ও আরও নানা পুষ্টিকর উপাদান। এগুলোর প্রতিটিই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
সতর্কতা: অতিরিক্ত সয়াবিন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। দিনে ৫০ গ্রামের বেশি সয়াবিন খাওয়া ঠিক নয়। অনেকেরই বেশি সয়াবিন হজমে সমস্যা হয়। তবে সয়া মিল্ক প্রতিদিনই খাওয়া যায়। যাদের দুধ খেলে হজমের অসুবিধা হয়; তারা প্রতিদিনই সয়া মিল্ক খেতে পারেন।
চিত্রদেশ//এইচ//