স্বাস্থ্য কথা

স্বাস্থ্য সমস্যায় ঘরোয়া চিকিৎসা

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

আমরা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ঘরোয়া চিকিৎসা করে থাকি। এর কোনোটা হয়তো ঠিক, আবার কোনোটা হয়তো ঠিক নয়। আজ এমনকিছু ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বলা হবে যা আপনার স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান হতে পারে। জেনে নিন কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার কার্যকর ঘরোয়া চিকিৎসা।

বাতরোগ: গ্রিন টি-তে একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আর্থ্রাইটিস তথা বাতরোগের ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে পারে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের নাম হচ্ছে এপিগ্যালোক্যাটেচিন-৩-গ্যালেট। এছাড়া ঝাল মরিচে বিদ্যমান ক্যাপসাইসিন জয়েন্টের ব্যথা, অনমনীয়তা ও ফোলা প্রশমিত করতে পারে। এই উপকার পেতে ব্যথার স্থানে ঝাল মরিচের পেস্ট লাগাতে পারেন।

শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ: গবেষণায় দেখা গেছে, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ বা ঠান্ডায় ভুগলে চিকেন স্যূপ খেলে উপকার পাওয়া যায়। গবেষকরা ধারণা করেছেন, চিকেন স্যূপে প্রদাহনাশক উপাদান রয়েছে যা উপরিস্থ শ্বাসতন্ত্রীয় সংক্রমণের মাত্রা কমাতে পারে।

কাশি: আর্কাইভস অব পিডিয়াট্রিকস অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট মেডিসিনে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, শিশুদের কাশি কমাতে মধু কাশির ওষুধের চেয়েও বেশি কার্যকর হতে পারে। মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের মতে, ২ বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য কাশির ওষুধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষণায় গবেষকরা ২ থেকে ৫ বছরের শিশুদের আধা চা-চামচ, ৬ থেকে ১১ বছরের শিশুদের ১ চা-চামচ ও ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের ২ চা-চামচ মধু খেতে দিয়েছেন। কিন্তু ১ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধু খাওয়াবেন না।

কোষ্ঠকাঠিন্য: কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে নিয়মিত আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। কারো কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তিনি তিসি বীজ খেয়ে পরিত্রাণ পেতে পারেন। তিসি বীজের চারটি মেকানিজম কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে সহায়তা করে। এই বীজে দ্রবণীয় আঁশ ও অদ্রবণীয় আঁশ উভয় রয়েছে। অদ্রবণীয় আঁশ মলকে স্তূপ করে, যার ফলে অন্ত্রে সহজে চলাচল করতে পারে। দ্রবণীয় আঁশ আন্ত্রিক বাগানের সার হিসেবে কাজ করে, এর ফলে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার জন্য অনুকূল পরিবেশ গড়ে ওঠে। তিসি বীজ হচ্ছে উদ্ভিজ্জ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের সমৃদ্ধ উৎস যা মলকে নরম রাখে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। প্রতিদিন দুই থেকে তিন টেবিল চামচ তিসি বীজ খেতে পারেন। সেইসঙ্গে প্রচুর পানি পান করতে হবে।

কাটাছেঁড়া ও আগুনে দগ্ধ ত্বক: ত্বক কেটে গেলে, কিছুর সঙ্গে ঘষা খেলে অথবা আগুনে পুড়লে মধু ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাফেক্ট হেলথ ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা ও ন্যাচারোপ্যাথিক ডক্টর নাদিয়া কুমেনটাস বলেন, কাটাছেঁড়া ও পোড়া ত্বকে মানুকা হানি ১০০ শতাংশ কাজ করে। মধুর ব্যাকটেরিয়া-বিরোধী ও ক্ষত নিরাময়কারী ক্ষমতা সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। কাটাছেঁড়া ও পোড়া ত্বকের ওপর মধুর একটি পাতলা লেয়ার দিয়ে ঢেকে দিন। প্রতিদিন এই ড্রেসিং পরিবর্তন করুন।

মাথাব্যথা: থ্রবিং হেডেক বা ধবধবে মাথাব্যথা থাকলে কফি পান করে দেখতে পারেন। কফির ক্যাফেইন রক্তনালীকে সংকুচিত করে মাথাব্যথা কমাতে পারে। ক্যাফেইন ব্রেইনের নিউরোট্রান্সমিটার অ্যাডিনোসাইন রিসেপ্টরকে ব্লক করে মাইগ্রেনের ব্যথা প্রশমিত করতে পারে। তবে কফি বেশি খাবেন না, কারণ শরীর ক্যাফেইনে আসক্ত হয়ে পড়লে ক্যাফেইন না খেলেও মাথাব্যথা হতে পারে।

পাইলস: হেমোরয়েড বা পাইলস থেকে মুক্তি পেতে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞরা সিটজ বাথের পরামর্শ দিয়েছেন। এ পদ্ধতিতে একটি গামলায় কুসুম গরম পানিতে বসে থাকতে হয়। কার্যকারিতা বাড়াতে এপসম সল্ট মেশাতে পারেন। ১৫ মিনিট বসে থাকুন, বিশেষ করে মলত্যাগের পর। এতে উক্ত্যক্ত স্থানে আরাম পাবেন। দিনে কয়েকবার রিপিট করুন।

ঢেঁকুর ওঠা: ঢেঁকুর ওঠলে চিনিতে পরিত্রাণ পেতে পারেন। চিনিকে ঢেঁকুর ওঠার ওষুধ বলা যেতে পারে। ফুসফুসের নিচের মাংসপেশি ডায়াফ্রামের অনৈচ্ছিক সংকোচন হলে ঢেঁকুর ওঠে। চিনি খেলে গলার পেছনটা উদ্দীপ্ত হয়ে ঢেঁকুর বন্ধ হয়। হার্ভার্ড হেলথ লেটারের একটি কলামে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

চিত্রদেশ//এলএইচ//

Related Articles

Back to top button