রিফাত হত্যা: অপ্রাপ্তবয়স্ক ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড
বরগুনা প্রতিনিধি
বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার দ্বিতীয় খণ্ডে থাকা ১৪ শিশুর ১১ জনকে শাস্তি ও বাকি ৩ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার সময় জেলা শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে ১৪ শিশুই আদালতে উপস্থিত ছিলো।
শিশুদের মধ্যে রাশেদুল হাসান রিশান ফরাজী, রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার, আবু আব্দুল্লাহ রায়হান ওলিউল্লাহ ওলি, মো. নাইম ও তানভীর হোসেনকে দশ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এছাড়া জয় চন্দ্র সরকার, নাযমুল হাসান, রাকিবুল হাসান নিয়ামত, আবু সাইদ মারুফ বিল্লাহ ও মহিবুল্লাহ্কে পাঁচ বছর; প্রিন্স মোল্লাকে তিন বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- আরিয়ান হোসেন শ্রাবন, মারুফ মল্লিক ও রাতুল সিকদার জয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবীগণ সকলেই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সকলেই এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মোবাইল ফোনে ধারণকৃত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ঘটনার পরদিন ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো পাঁচ-ছয় জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ।
ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দু’ভাগে বিভক্ত করে মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এতে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি ১৪ শিশুর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন শিশু আদালত। এতে ৭৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক ও যুক্তিখণ্ডন শেষে এ মাসের গত ১৪ অক্টোবর রায়ের তারিখ ধার্য করেন আদালত। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) এ রায় ঘোষণা করা হলো।
আপাতত এ রায়ের মাধ্যমে শেষ হল রিফাত শরীফ হত্যা মামলা। তবে পরবর্তীতে সাজাপ্রাপ্ত শিশু অভিযুক্তদের উচ্চ আদালতে করা আপিলের রায়ের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সর্বশেষ এ মামলার পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম। এর আগে একই মামলার প্রাপ্তবয়স্কদের প্রথম রায়ের ৬ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি উচ্চ আদালতে আপিল করেছে।
উল্লেখ্য, শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে পুলিশের ক্রসফায়ারে নিহত নয়ন বন্ড ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে রিফাত শরীফ নিজে পায়ে হেঁটে রিকশায় উঠে স্ত্রী মিন্নির সহযোগিতায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠায়। ওইদিনই হাসপাতালে রিফাত শরীফ মারা যান।
চিত্রদেশ//এফ//