প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা হবে না
স্টাফ রিপোর্টার:
এ বছর কেন্দ্রীয়ভাবে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। স্ব স্ব স্কুলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনায় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম আল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা পিইসি প্রস্তাবের সার সংক্ষেপ পাঠিয়েছিলাম; তাতে সম্মতি পাওয়া গেছে। আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, গত সপ্তাহে পিইসি ও ইইসি পরীক্ষা বাতিলে সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সম্মতি দিয়ে সেটি আজ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, চলতি বছর ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ১৩১ কর্মদিবস নির্ধারণ করা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এ পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ দিন বিষয়ভিত্তিক পাঠদান দেয়া সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ আছে। এ ছুটির মেয়াদ আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে মোট ৭১ কার্যদিবস বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকবে। পঞ্চম শ্রেণির ৪০৬টি স্বাভাবিক পাঠদান সম্ভব হবে না। তবে সংসদ টেলিভিশনে চলমান ‘ঘরে বসে শিখি’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিন্তু অনেকের শিক্ষার্থীর বাসায় টেলিভিশন না থাকায় এবং টেলিভিশন থাকলেও ক্যাবল সংযোগ না থাকায় সকল শিক্ষার্থীকে এ প্রোগ্রামের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
সারসংক্ষেপে আরও বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণির প্রায় ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী টেলিভিশন শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে বা অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। সে বিবেচনায় ১২ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ বেতারে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এতে ৯৭ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী-অভিভাবক মোবাইল ও রেডিওর মাধ্যমে এ সুবিধা নিতে পারছেন। এছাড়াও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষকরা যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বলা হয়, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি পাঠ (নেপ) ও বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটির (বেডু) পরিকল্পনা অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী-ইবতেদায়ি ও জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নিতে হলে আরও প্রায় ৫০ কার্যদিবস পাঠদান প্রয়োজন রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে বিদ্যালয়গুলো খোলা না হলে নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এ দুই স্তরের অবশিষ্ট পাঠদান সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।
প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হলে অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা করা হবে। উভয় পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো পাঠ্যবইয়ের ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পাঠ কমেছে। করোনা পরিস্থিতি শুরুর আগে পাঠ্যক্রমের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পড়ানো হয়েছে। আগের ও পরের পঠিত মোট পাঠ্যক্রমের ওপর ডিসেম্বরের শেষের দিকে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে।
এদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান সাধারণ ছুটি ৩১ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সেপ্টেম্বর মাসে ছুটি আরও বাড়ানো হতে পারে। দুই মন্ত্রণালয়ের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন আভাস পাওয়া গেছে। দু-একদিনের মধ্যে এ সম্পর্কিত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানান, করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক পর্যায়ে আসেনি। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও বাড়ানো হতে পারে। তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর মাসেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সম্ভব হবে না। তবে দুই মন্ত্রণালয় আলোচনা শেষে দু-একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
চিত্রদেশ//এল//