উদ্যোক্তার কথা

বাাংলাদেশে চামড়াজাত পণ্যের সম্ভাবনা খুবই ভালো: মোঃ সালমান

লাবণ্য হক:

বাংলাদেশে চামড়াজাত পণ্যের সমস্যা ও সম্ভবনা নিয়ে চিত্রদেশ ডটকমের সাথে একান্ত সাক্ষাতকার দিয়েছেন ‘এ.এম.আর লেদারএক্সপাটর্’ -এর কর্ণধার তরুণ উদ্যোক্তা -মোঃ সালমান – সাক্ষাতকার গ্রহণ করেছেন- শেখ লাভলী হক লাবণ্য

চিত্রদেশ ডটকম: বাংলাদেশে লেদার প্রোডাক্টের বাজারের বর্তমান অবস্থা কী? বাংলাদেশে লেদার পণ্যের সম্ভবনা কতটুকু?

মোঃ সালমান: বর্তমানে লেদার প্রোডাক্টের বাজার দেশ বিদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে,বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্পের পরপরই চামড়া শিল্পের বর্তমান অবস্থান। বাাংলাদেশে চামড়াজাত পণ্যের সম্ভাবনা খুবই ভালো। এছাড়া যারা বিনিয়োগে আগ্রহী তারা যদি এই শিল্পে বিনিয়োগ করে তাহলে সেটা দেশের জন্য খুব লাভজনক হবে। একই সঙ্গে বেকার নারী পুরুষের কর্মসংস্থানও হবে। দেশীয় পণ্যের বাজার আরো প্রসারিত হবে।

চিত্রদেশ ডটকম: এ.এম.আর লেদার এক্সপার্ট মূলত কী কী ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করে?

মোঃ সালমান: বেল্ট, মানিব্যাগ, নারী-পুরুষের স্লিপার জুতা, লেডিস ব্যাগ, হ্যান্ডপার্স, ফটোফ্রেমসহ প্রভৃতি তৈরি করছি। আমাদের প্রোডাক্টের সবচেয়ে বড় বৈচিত্র্য আমরা সব প্রোডাক্টই এক্সপোর্ট লেদার দিয়ে তৈরি করে থাকি। এছাড়া আমরা সব সময় অন্যদের চেয়ে একটু ডিফারেন্ট ভাবনা থেকে ডিজাইনগুলো করে থাকি। বিশেষকরে ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই আমরা ডিজাইনারদের সাথে পরামর্শ করে প্রোডাক্টগুলো তৈরি করি থাকি।

চিত্রদেশ ডটকম: আপনার দৃষ্টিতে বর্তমানে লেদার প্রোডাক্টের চাহিদা বাড়ছে নাকি কমছে বলে মনেহয়?

মোঃ সালমান: দিনদিন চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। তবে ক্রেতারা এখন ডিজাইনের নতুনত্ব চায়। মানসম্মত প্রোডাক্টর চায় ক্রেতাদের চাহিদা আমাদের বুঝতে হবে। এবং প্রোডাক্টের কোয়ালিটি অবশ্যই মেইনটেইন করতে হবে। আমরা এখনো দেশীয় মার্কেটগুলো ভালভাবে ধরতে পারিনি। দেশীয় মার্কেটগুলো চায়নার প্রোডাক্টে ভরে গেছে।

চিত্রদেশ ডটকম: দেশীয় বাজার না ধরতে পারার কারণ কী?

মোঃ সালমান: চায়না প্রোডাক্টের খরচ কম, প্রচুর ডিজাইন। কিন্তু আমাদের লেদার প্রোডাক্টের তৈরি খরচ বেশি হওয়াতে পণ্যের মূল্যটা বেশি হয়ে যায়। যেজন্য ক্রেতারা কিনতে চায় না। তাছাড়া জনবল কম, ডিজাইনার স্বল্পতা। সবকিছু মিলিয়ে একটু সমস্যা রয়েছে।

চিত্রদেশ ডটকম: এই ব্যবসায় আসার লক্ষ্যটা কী ছিল? আপনার মত যারা তরুণ উদ্যোক্তা হতে চায় তাদের উদ্দেশ্য কিছু বলুন?

মোঃ সালমান: আমি নিজে একজন উদ্যোক্তা হবো এবং আমার প্রতিষ্ঠানে অনেক বেকার তরুণদের কর্মসংস্থান হবে। এটাই ছিল আমার মূল লক্ষ্য । আমার মত তরুণদের কে বলবো, চাকরির আশায় সময় নষ্ট না করে কিছু টেকনিক্যাল কাজ শিখে নিজেই একজন চাকরিদাতা হয়ে যান। পড়াশোনার ফাকেঁ ফাকেঁ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে রাখলে সেটা কোন নতুন উদ্যোগ নেয়ার ক্ষেত্রে বেশ কাজে লাগবে। এতে নিজের জন্য ও দেশের জন্য কিছু করতে পারবেন।

চিত্রদেশ ডটকম: একজনতরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে কোন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় কী? তরুণ উদ্যোক্তাদের চামড়া শিল্পে এগিয়ে আসতে সরকারের করণীয় কী?

মোঃ সালমান: সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে চামড়া শিল্পে আমরা প্রযুক্তির দিক দিয়ে খুব পিছিয়ে আছি। দক্ষ কারিগরের অভাব রয়েছে। সৃষ্টিশীল, শিক্ষিত দক্ষ ডিজাইনারের খুব অভাব।এক্ষেত্রে সরকার যদি এই শিল্প রিলেটেড প্রশিক্ষণের আরো বেশি ব্যবস্থা করতো যতটুকু আছে তা অপ্রতুল। সরকারীভাবে যদি আরো বেশি বেশি লেদার প্রোডাক্টের ওপর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালূ করে। তরুণদেরকে বিনামূল্যে লোন দেয়ার ব্যবস্থা করতো তাহলে এই শিল্পের প্রসার আরো ব্যাপকতা লাভ করবে। রপ্তানি শিল্প হিসেবেও বৈদেশিকমুদ্রা অর্জন করবে।

চিত্রদেশ ডটকম: আপনাদের প্রোডাক্টগুলো পরিবেশনের ব্যবস্থা কী?

মোঃ সালমান: আমরা বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে প্রোডাক্ট সাপ্লাই দিচ্ছি। যেমন-এপেক্স, লোটো, বাটা, আড়ংয়ে দিচ্ছিা। আর চলতি মাস থেকে এ.এম.আর শোরুমে আমাদের প্রোডাক্টগুলো পাওয়া যাবে।

চিত্রদেশ ডটকম: এ.এম.আর লেদারএক্সপার্ট নিয়ে আপনার ভবিষৎ পরিকল্পনা কী?

মোঃ সালমান: এই শিল্পে যে সম্ভাবনা দেখছি সেই সম্ভবনা কে আমি কাজে লাগাতে চাই। সরকার যদি আমাদের প্রোডাক্টের মূল্যায়ন করে তাহলে আমরা দেশের জন্য কিছু করতে পারবো।

চিত্রদেশ ডটকম//এস//

Related Articles

Back to top button