৭২ সালের পর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখল দেশবাসী
নিজস্ব প্রতিবেদক
তীব্র গরমে পুড়ছে দেশ। তাপমাত্রার পারদ দিনদিন ওপরের দিকে উঠছে। নেই বৃষ্টির দেখা। বাতাসে যেন আগুনের ফুলকি। গ্রীষ্মের শুরুতেই এমন তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। এরই মধ্যে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যশোরে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা বাংলাদেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গায় এদিন থার্মোমিটারের পারদ উঠেছে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলিসিয়াসে।
এর আগে, ১৯৯৫ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। আর দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯৭২ সালের ১৮ মে, ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাজশাহীতে।
মঙ্গলবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ১৯৬৫ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর আগে ১৯৬০ সালে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এবার তাপপ্রবাহের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এর কারণ জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, সবসময়ই এসব এলাকায় তাপমাত্রা বেশি আসে, বহু আগে থেকেই হয়ে আসছে। কারণ এই এলাকাগুলো ভারতের বিহার, পশ্চিমবঙ্গের পাশে। ওইসব এলাকায় ৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা উঠেছে গতকাল, সেটার আঁচ এসেই পড়ে এখানে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এবার গ্রীষ্মের শুরুতে এই এপ্রিল মাসে টানা যত দিন তাপপ্রবাহ হয়েছে, তা গত ৭৬ বছরে হয়নি। গত বছর (২০২৩) একটানা ১৬ দিন তাপপ্রবাহ হয়েছিল। এবার তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে ১ এপ্রিল থেকে। মঙ্গলবারও তাপপ্রবাহ বইছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ফলে টানা ৩০ দিন তাপপ্রবাহ দেখলো বাংলাদেশ। দেশের ইতিহাসে এমনটি আর কখনও হয়নি।
আবহাওয়াবিদ আজিজুর রহমান বলেন, এরকম তাপমাত্রা অবস্থা আরও কয়েকদিন চলবে। তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রির আশেপাশে বা এর বেশিও হতে পারে। মে মাসের ২-৭ তারিখের ভেতরে তাপমাত্রা প্রশমিত হয়ে আসবে বৃষ্টির ফলে। এসময়ে পুরো বাংলাদেশেই বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ২ মের আগে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এ জেলায় সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি, শনিবার (২৭ এপ্রিল) ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি, রোববার (২৮ এপ্রিল) ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বশেষ সোমবার (২৯ এপ্রিল) ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
//এস//