৬২ পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল
স্টাফ রিপোর্টার:
বিক্ষিপ্ত সংঘাত আর বিএনপির প্রার্থীদের বর্জনের মধ্যে তৃতীয় ধাপে ৬২ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টায় এসব পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলে। এই ধাপে সব পৌরসভায়ই ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ হয়।
পৌরসভা নির্বাচনের প্রথম দুই ধাপে গোলযোগ-সংঘর্ষ হওয়ায় তৃতীয় ধাপে বিশেষ সতর্কতা নেওয়ার কথা জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে তাতেও সহিংসতার রাশ টানা যায়নি। কারচুপির অভিযোগ তুলে নাটোরের সিংড়া, বগুড়ার শিবগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ সদর ও কটিয়াদী এবং সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পৌরসভায় ব্যালট ছিনতাই অভিযোগে তিন চেয়ারম্যানসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। ফেনী পৌরসভায় একটি কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। কয়েকটি কেন্দ্রে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু পৌরসভায় এক কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর এজেন্টসহ তিনজন আহত হয়েছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌরসভায় এক কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের উপর হামলা হয়েছে।
তৃতীয় ধাপের ৬২ পৌরসভায় প্রায় ১৯ লাখ ভোটার একজন করে মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ভোট দেন।
ভোট গণনায় এরই মধ্যে বেশি কিছু পৌরসভায় মেয়র পদের ফলাফল পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে জয়ী বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা।
মেয়র পদে জিতলেন যারা:
নাটোরের সিংড়া পৌরসভায় জান্নাতুল ফেরদৌস (আওয়ামী লীগ) ১৯ হাজার ৪২১ ভোট পেয়ে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
ভোলার বোরহানউদ্দিন পৌরসভায় রফিকুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ) ৭ হাজার ১৯৪ ভোট পেয়ে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
ভোলার দৌলতখান পৌরসভায় জাকির হোসেন তালুকদার (আওয়ামী লীগ) ৫ হাজার ৮০০ ভোট মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
ফেনী পৌরসভায় নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী (আওয়ামী লীগ) ৬৯ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর পৌরসভায় মতিউর রহমান খান (স্বতন্ত্র) ৭ হাজার ৬২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় আমিনুল ইসলাম রাবেল (বিদ্রোহী) ৫ হাজার ৮৫১টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
জকিগঞ্জ পৌরসভায় আব্দুল আহাদ (স্বতন্ত্র) ২ হাজার ৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় মো.পারভেজ মিয়া (আওয়ামী লীগ) ২২ হাজার ৯২৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
হিলি হাকিমপুর পৌরসভায় জামিল হোসেন চলন্ত (আওয়ামী লীগ) ৬ হাজার ৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
রাজবাড়ীর পাংশা পৌরসভায় মো. ওয়াজেদ আলী মাস্টার (আ.লীগ মনোনীত) ১১ হাজার ১৬১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া পৌরসভায় শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল (আ.লীগ মনোনীত) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভায় আব্দুল ওয়াহেদ কবির খান (আ.লীগ মনোনীত) ১৪ হাজার ৫৬৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নওগাঁ পৌরসভায় নজমুল হক সনি (বিএনপি প্রার্থী) ২৯ হাজার ২৬৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌরসভায় এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ (আ.লীগ মনোনীত) ১২ হাজার ৮৭৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভায় আলহাজ্ব কামাল উদ্দিন খান (আ.লীগ মনোনীত) ১০ হাজার ১৫১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
বরিশালের গৌরনদীতে হারিছুর রহমান হারিছ (আ.লীগ মনোনীত) ২১ হাজার ৪৩০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভায় মো. গোলাম কবির (আ.লীগ মনোনীত) ৩ হাজার ৯৫২ ভোট বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভায় জি এম মীর হোসেন মীরু (আ.লীগ মনোনীত) ৫ হাজার ৯২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
কুমিল্লার বরুড়া পৌরসভায় বকতার হোসেন (আ.লীগ মনোনীত) ১৬ হাজার ২২৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভায় নিরুজ্জামান বুলবুল (আ.লীগ মনোনীত) ১৩ হাজার ৪৬৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।
নোয়াখালীর চৌমুহনী পৌরসভায় খালেদ সাইফুল্লাহ (স্বতন্ত্র) ১৩৪১৮ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন
নোয়াখালীর হাতিয়া পৌরসভায় কে এম ওবায়দুল্লাহ (আ.লীগ মনোনীত) ১৬৯৯৮ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভায় সহিদুজ্জামান সেলিম (স্বতন্ত্র) ৮ হাজার ৩৪২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু পৌরসভায় ফারুক হোসেন (আ.লীগ মনোনীত) ৭ হাজার ৩৪৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ময়মনসিংহের ভালুকা পৌরসভায় ডা. এ কে এম মেজবাহ উদ্দিন (আ.লীগ মনোনীত) ১৩ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
গৌরীপুর পৌরসভায় সৈয়দ রফিকুল ইসলাম (স্বতন্ত্র) ৭,৭৭৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পৌরসভায় মো. শওকত উসমান শুক্কুর আলী (আওয়ামী লীগ) ১৩ হাজার ৩৪৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
যশোর মণিরামপুর পৌরসভায় মাহামুদুল হাসান (আওয়ামী লীগ মনোনীত) ১৪ হাজার ১৯৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভায় আলাউদ্দিন আলাল (আওয়ামী লীগ মনোনীত) ১১ হাজার ১২৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
বরগুনা পৌরসভায় কামরুল আহসান মহারাজ (আওয়ামী লীগ মনোনীত) ৯ হাজার ২৯৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
পাথরঘাটা পৌরসভায় আনোয়ার হোসেন আকন (আওয়ামী লীগ মনোনীত) ৬ হাজার ৬৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভায় মাহবুব উল আলম লিপন (আওয়ামী লীগ মনোনীত) ২৩ হাজার ২১২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভায় মামুন সরকার মিঠু (আওয়ামী লীগ মনোনীত) ১৫ হাজার ৫৬৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
যে ৬২ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করা হয়েছে
দিনাজপুরের হাকিমপুর, নীলফামারীর জলঢাকা, কুড়িগ্রামের উলিপুর, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, বগুড়ার ধুনট, শিবগঞ্জ, গাবতলী, কাহালু ও নন্দীগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর, নওগাঁর ধামইরহাট ও নওগাঁ, রাজশাহীর কেশরহাট ও মুণ্ডুমালা, নাটোরের সিংড়া, পাবনা সদর, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু ও কোটচাঁদপুর, যশোরের মনিরামপুর, নড়াইল সদর ও কালিয়া, খুলনার পাইকগাছা, সাতক্ষীরার কলারোয়া, বরগুনা সদর ও পাথরঘাটা, ভোলার বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখান, বরিশালের গৌরনদী ও মেহেন্দিগঞ্জ, ঝালকাঠির নলছিটি, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী, টাঙ্গাইলের সদর, মির্জাপুর, ভূঞাপুর, সখিপুর ও মধুপুর, জামালপুরের সরিষাবাড়ী, শেরপুরের নকলা ও নালিতাবাড়ী, ময়মনসিংহের ভালুকা, গৌরীপুর ও ঈশ্বরগঞ্জ, নেত্রকোনার দুর্গাপুর, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, মুন্সীগঞ্জ সদর, রাজবাড়ীর পাংশা, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, শরীয়তপুরের নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও জাজিরা, সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জ, মৌলভীবাজার সদর, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও বরুড়া, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফেনী সদর, নোয়াখালীর হাতিয়া ও চৌমুহনী এবং লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভা।
ভোট নেওয়ার আগেই বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে আওয়ামী লীগের এস এম মনিরুল হক তালুকদার ও কুমিল্লার লাকসামে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক মো. আবুল খায়ের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
চিত্রদেশ//এল//