৫৭ হাসপাতালে নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট
স্টাফ রিপোর্টার:
করোনা রোগীদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব। রোগীদের জরুরি প্রয়োজনে অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়ার জন্য ১০৭টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট বসানো হয়েছে। তবে এখনো ৫৭টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল (কেন্দ্রীয়) অক্সিজেন প্লান্ট ছাড়াই করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে ৯টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট নির্মাণ ও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা রোগীদের জন্য সবচেয়ে জরুরি অক্সিজেন সাপোর্ট। তাই হাসপাতালে প্রথমেই দরকার হয় অক্সিজেন। রোগীর লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে অক্সিজেনের সরবরাহ না থাকলে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হাসপাতালের প্রতিটি শয্যার সঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ থাকলে অনেক জটিল রোগীদের আইসিইউতে নিতে হয় না। অক্সিজেন সাপ্লাই ঠিক থাকলে ভেন্টিলেটর পর্যন্ত যাওয়ারই দরকার হয় না। তাই করোনা হাসপাতালে শুরুতেই অক্সিজেন সার্পোট দরকার।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজী বিভাগের অধ্যাপক ডা. সুলতানা শাহানা বানু বলেন, প্রত্যেকটি করোনা হাসপাতালেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট থাকা জরুরি। পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকা দরকার। যেগুলো আছে তা পর্যাপ্ত নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দেড় লাখের বেশি। এর মধ্যে ১০ হাজার ৪৬৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন হোম আইসোলেশনের থেকে।
হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের মধ্যে যাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে তারাই হাসপাতালে আসছেন। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ছেই। অনেক হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি আছেন। অনেক হাসপাতালে খালি নেই আইসিইউ। শিগিগিরই হাসপাতালগুলোতে নির্ধারিত শয্যাগুলো রোগীতে ভরে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন খোদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরই। শয্যা সংকট দেখা দেয়ার পাশাপাশি অক্সিজেনের ঘাটতি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, মহানগরসহ ঢাকার সরকারি-বেসকারি হাসপাতালে ৫৪টি অক্সিজেন লাইন রয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহে ৩টি, চট্রগ্রামে ১৩টি, রাজশাহীতে ৭টি, রংপুরে ১২টি, খুলনায় ১০টি, বরিশালে ৬টি ও সিলেটে ২টি হাসপাতালে অক্সিজেন লাইন রয়েছে। আর সারাদেশে সর্বমোটে ২৬ হাজার ৫১৫ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে।
যেসব হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট নেই
রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনী ডিজিজেস এন্ড ইউরোজলজী, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অবস নিউরোসায়েন্সস ও হাসপাতাল, চট্রগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতাল, চট্রগ্রাম হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল (বেসরকারী), নারায়নগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল (নির্মানাধীন), শরীয়তপুর জেলা সদর হাসপাতাল ২০ শয্যা কোভিড হাসপাতাল (নির্মানাধীন), ময়মনসিংহ নেত্রকোণা জেলা সদর হাসপাতাল (প্রক্রিয়াধীন), চট্রগ্রামের ১৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সমূহ, রাঙ্গামাটির ১০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সমূহ, খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সমূহ, ফেনী সোনাগাজী মঙ্গলকান্দি ২০ শয্যা হাসপাতাল, লক্ষীপুরের ১০০ শয্যা সদর হাসপাতাল, লক্ষীপুরের ৫টি উপজেলা সমূহ।
এছাড়া চাদঁপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, বগুড়া টিএমএসএস, পাবনা জেনারেল হাসপাতাল (প্রক্রিযাধীন), জয়পুর হাট আধুনিক সদর হাসপাতাল (প্রক্রিয়াধীন), পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল, ঝালকাঠী সদর হাসপাতাল (প্রক্রিয়াধীন), দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাদিমপাড়া ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতাল (প্রক্রিয়াধীন), মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল (প্রক্রিয়াধীন), রাজননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
চিত্রদেশ//এফটি//