অর্থ-বাণিজ্যপ্রধান সংবাদ

১.৮৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এলো জুলাই মাসে

স্টাফ রিপোর্টার:
হঠাৎ কমে গেছে রেমিট্যান্স। চলতি বছরের জুলাই মাসে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এসেছে ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ৯০ হাজার (১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার । টাকার হিসাবে যার পরিমাণ ১৫ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। যা গেল জুন মাসের চেয়ে ছয় কোটি ৯৩ লাখ ডলার কম। এছাড়া ২০২০ সালের জুলাই মাসের তুলনায় ২৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ কম।

সোমবার (২ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক এবিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে উল্লেখ করা হয়, জুলাই মাসে ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৫ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় ২৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ কম। গত বছরের জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার।

এদিকে হঠাৎ প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে অনেক দেশে লকডাউন চলছে। এর ফলে প্রবাসীদের আয়ও কমে যাওয়ার কারণে রেমিট্যান্স কমে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, সদ্যসমাপ্ত জুলাই মাসে ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। জুলাইয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে তিন কোটি ২২ লাখ ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৪০ কোটি ১২ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এ ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৫ কোটি মার্কিন ডলার। এরপরে রয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংক। এ ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২২ কোটি ৯১ লাখ ডলার। এছাড়াও রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৯ কোটি ৪৮ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৭৫ লাখ ডলার এবং জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে পাঁচ কোটি ৯২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

সদ্যসমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে। যা আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। অর্থবছরের হিসাবে এ যাবতকালে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ২০২০-২১ অর্থবছরে।

এদিকে জুলাইয়ে হঠাৎ প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কারণে অনেক দেশে লকডাউন চলছে। এর ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রবাসীদের আয় কমেছে। এসব কারণে রেমিট্যান্স পাঠানো কিছুটা কমেছে। তবে প্রবাসীদের কাজ ঠিক থাকলে আয়ও বেড়ে যাবে।

জুন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় চার হাজার ৬৪২ কোটি ডলার; প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুত এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে সাড়ে ১১ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী বাংলাদেশি যদি ১০০ টাকা দেশে পাঠান তবে তার সঙ্গে আরও দুই টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী।

চিত্রদেশ//এফটি//

Related Articles

Back to top button