১০০ টাকার মোবাইল রিচার্জে ৭৮-ই থাকছে
স্টাফ রিপোর্টার:
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোনে কথা বলাসহ অন্যান্য সেবার ওপর বাড়তি ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে করোনাভাইরাসের এ দুর্যোগকালে সাধারণ জনগণের জীবন-যাপন যখন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে, তখন বাজেটে বাড়তি করারোপ করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। তাই এখন সেই অবস্থান থেকে সরে আসছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আগামীকাল সোমবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২০ সালের অর্থবিল পাস করার সময় মোবাইল ফোনের কলরেটে বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিতে পারেন অর্থমন্ত্রী। এর আগে গত ১১ জুন বাজেট বক্তৃতায় মোবাইল ফোনে কথা বলা, খুদে বার্তা পাঠানো ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।
নিয়ম অনুযায়ী, গত ১১ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাবের পরপরই তা কার্যকরও হয়ে গেছে। কিন্তু বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় গ্রাহক পর্যায়ে তীব্র সমালোচনা হয়। পরের দিন অর্থাৎ ১২ জুন বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনো জবাব দেননি অর্থমন্ত্রী।
তবে একই সংবাদ সম্মেলনে সেদিন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ অকারণে বেশি কথা বলেন। যে পরিমাণ কর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়, তাতে দশমিক ৫ শতাংশ খরচ বাড়বে। এতে জনজীবনে তেমন প্রভাব পড়বে না।’ তার এমন বক্তব্যে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তাই সেই অবস্থান থেকে সরে আসছে সরকার।
সূত্র জানায়, বাজেট প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গেই সব ধরনের সম্পূরক শুল্ক কার্যকর হয়ে যায়। ফলে মোবাইল ফোনে কথা বলা, খুদে বার্তাসহ অন্যান্য সেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট, এক শতাংশ সারচার্জ, ১৫ শতাংশ প্রস্তাবিত সম্পূরক শুল্ক গ্রাহক পর্যায়ে আরোপ করা হয়। সবমিলিয়ে এখন ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সরকার পায় ২৫ টাকা। ফলে গ্রাহকের ব্যবহার করতে পারেন ৭৫ টাকা। সম্পূরক শুল্কহার আবার আগের জায়গায় ফেরত গেলে সরকার পাবে ২২ টাকা। আর গ্রাহক ৭৮ টাকা ব্যবহার করতে পারবেন। বাড়তি শুল্ক আরোপ করায় গ্রাহকের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে ৩ টাকা।
একটি সূত্র বলেছে, মোবাইল সেবায় কর বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেননি। মূলত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাড়তি কর প্রত্যাহারের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে, যা আগামীকাল সোমবার অর্থবিলের মাধ্যমে সংসদে পাস হবে। অর্থবিল পাসের মধ্য দিয়ে নতুন বাজেটের কর প্রস্তাবসমূহ কার্যকর হবে।
চিত্রদেশ //এল//