হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করল ঢাবির ফার্মেসি অনুষদ
স্টাফ রিপোর্টার:
চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার রোগী বাংলাদেশেও শনাক্ত হওয়ার পর থেকে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার মজুত করে রাখার কারণে চাহিদা মোতাবেক এসব প্রয়োজনীয় দ্রব্য পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে বিনামূল্যে দেয়ার জন্য নিজস্ব ল্যাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টার ও ফার্মেসি অনুষদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য তারা এটি তৈরি করেছে। জীবাণুনাশকটি তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি ও ফার্মাকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মুহিত।
পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও ল্যাবের সীমাবদ্ধতার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কাউকে এই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সুবিধা দেয়া যাচ্ছে না। তবে কেউ অর্থায়ন ও ল্যাবের সুবিধা দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরের একটি বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। সেখানে মহামারি আকার ধারণ করা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে একের পর এক প্রাণ হারাতে থাকেন মানুষ। পরে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী।
ইতোমধ্যে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশেও করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানান।
এই খবর প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের সংকট দেখা দেয়। এরপর নিজস্ব ল্যাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হেক্সিসল তৈরির উদ্যোগ নেয় ঢাবির ফার্মেসি অনুষদের শিক্ষকরা। বিভাগের নিজস্ব অর্থায়নে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব ল্যাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানানো শুরু করে। গত ১১ মার্চ তা বানানো সম্পন্ন হয়।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির সঙ্গে যুক্ত থাকা ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি ও ফার্মাকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মুহিত বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর যখন শুনি বাজার থেকে এসব পণ্য স্টক আউট হয়ে গেছে, তখন অন্তত নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন সুরক্ষিত থাকে সে জন্য নিজেদের দায়বদ্ধতা থেকে আমরা এটি প্রস্তুত করেছি। প্রথমদিন আমরা ২০০ বোতল তৈরি করেছি। যার জন্য খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। নিজেদের সাধ্যমতো ও ফান্ড পেলে এটি আরও বেশি প্রস্তুত করে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।’
আব্দুল মুহিত আরও বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার জন্য শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য এটি বানানোর উদ্যোগ নেই। কেউ যদি দেশের স্বার্থে এটি বানাতে চায়, তাহলে আমরা তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।’
চিত্রদেশ//এস//