অপরাধ ও আইনপ্রধান সংবাদ

সেই ৩ তরুণকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলে পড়ুয়া স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আটক তিন তরুণকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার রাতে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ওই তিন তরুণের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তবে, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় একমাত্র আসামি ও ছাত্রীটির বন্ধু ফারদিন ইফতেখার ওরফে দিহান গতকাল শুক্রবার আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি এখন কারাগারে।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে ওই স্কুলছাত্রীর লাশ আজ শনিবার ভোরে তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার গোপালপুরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই স্কুলছাত্রীকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে ডেকে লেক সার্কাস ডলফিন গলি পান্থপথ কলাবাগানের বাসায় নিয়ে যায় ফারদিন ইফতেখার দিহান। সেখানে ফাঁকা বাসায় মেয়েটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে দিহান। ধর্ষণের সময় প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়ে।

তখন বিবাদী ধর্ষণের বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য মেয়েটিকে নিয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে মেয়েটির মৃত্যু হয়। সংবাদ পেয়ে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত হাসপাতালে যায়।

খবর পেয়ে তরুণটির ওই তিন বন্ধু হাসপাতালে গেলে পুলিশ তাদের আটক করে। এর আগে ফারদিন মেয়েটির মাকে ফোন করে জানান, হাসপাতালে তার মেয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে।

পরে চারজনকে কলাবাগান থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ পরে স্কুলছাত্রীর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে ওই স্কুলছাত্রীর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

ময়নাতদন্ত শেষে ডা. সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, ‘ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের ফলে যৌন ও পায়ু পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত্যুর পূর্বে চেতনানাশক কিছু খাওয়ানো হয়েছে কিনা, তার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে কেমিক্যাল পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। এসব রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে।’

গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ আনা হয় ফারদিনের বিরুদ্ধে। কলাবাগান থানায় জিজ্ঞাসাবাদে ফারদিন একাই মেয়েটিকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন। পরে গতকাল তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পুলিশের নিউমার্কেট অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার আবুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে ও জিজ্ঞাসাবাদে ফারদিনের তিন বন্ধুর হত্যায় ও ধর্ষণে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তাই তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। যদি হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় ওই তরুণদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

চিত্রদেশ//এলএইচ//

Related Articles

Back to top button