প্রধান সংবাদ

লিপ ইয়ারের অফারে খেতে গিয়ে পুড়ে মারা গেলেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
লিপ ইয়ার। যে বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ২৯ দিন থাকে, সেই বছরটাকেই লিপ ইয়ার বলা হয়। আর প্রতি চার বছর পরপর ২৯ ফেব্রুয়ারি দিনটি আসে। এ কারণে লিপ ইয়ার আলাদা আমেজ নিয়ে আসে। লিপ ইয়ার হিসেবে বেইলি রোডের ওই ভবনে থাকা রেস্টুরেন্টগুলোতে চলছিল বিশেষ অফার। সেই অফারে খেতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত পুড়ে মরতে হলো ৪৪ জনকে।

বেইলি রোডের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৪ জন নিহত হয়েছে বলে সাংবাদকিদের জানয়িছেনে পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। নিহতদের মধ্যে দুজনের মরদেহ এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা গেছে। অনেকের খোঁজে ছুটছেন স্বজনেরা।

বহুতল ওই ভবনটিতে ছিল বেশ কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে কাপড়ের দোকান, রেস্টুরেন্টসহ নানা ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিল। লিপ ইয়ার হিসেবে ভবনটিতে থাকা রেস্টুরেন্টগুলোতে চলছিল বিশেষ অফার। কেনাকাটার পর প্রিয়জনদের নিয়ে অনেকেই সেই অফারে আকৃষ্ট হয়ে খেতে গিয়েছিলেন সেখানে। এমন অনেককেই সেখানে পুড়ে মরতে হলো।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে গ্রিন কজি কটেজ নামের সাততলা ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় কাচ্চিভাই রেস্টুরেন্টে আগুনের সূত্রপাত। আগুন লাগার কিছু সময় পরই একটি গ্যাস সিলেন্ডার বিস্ফোরিত হওয়ায় আগুন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। ২ ঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডে অবস্থিত কাচ্চিভাই রেস্টুরেন্টের নিচতলায় আগুন লাগে। গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজজনিত ত্রুটির কারণে আগুন লেগে থাকতে পারে বলে রেস্টুরেন্টে কর্মরত কর্মচারীদের মাধ্যমে তথ্য পায় তারা। রাত ৯টা ৫৬ মিনিটের দিকে সর্বপ্রথম ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে একে একে যোগ দেয় আরও ১২টি ইউনিট। কিন্তু এর আগেই ভবনজুড়ে আগুনের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। তখন জীবন বাঁচাতে সবাই দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। ভবনে আটকে থাকা লোকজনদের অনেকে ছাদে আশ্রয় নেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগার পর তা ওপরের তলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত লোকজন ওপরের দিকে উঠে যায়। এ সময় ভবন থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে কয়েকজন আহত হন। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৪ জন নিহত হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ৪৩ জনের নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেন। দগ্ধ হয়ে আরও অনেকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ৪৩ জন নিহতের কথা জানান। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩ জন, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ১০ জন এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ১ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা অনেক। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

//এস//

Related Articles

Back to top button