রেমিট্যান্সের বিপরীতে সহায়তা প্রদান আরো সহজ হলো
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রবাসীদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্সের বিপরীতে নগদ সহায়তা প্রদান কার্যক্রম আরো সহজ করলো সরকার। রেমিট্যান্স গ্রহণের জন্য আগে ৫ দিনের মধ্যে কাগজপত্র জমা দেয়ার নিয়ম থাকলেও এখন থেকে সংশ্লিষ্টরা ১৫ দিনের সময় পাবে।
বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে।
এরই মধ্যে জাতীয় বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে নগদ সহায়তা দেয়া শুরু হয়েছে। দেশে বৈধ উপায়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের (প্রবাসী আয়) ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অক্টোবর থেকে এই কার্যক্রম শুরু হলেও চলতি বছরের জুলাই থেকেই এ বিশেষ প্রণোদনা পাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের গুরুত্ব বিবেচনায় দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমজীবী মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক আয় বৈধ উপায়ে দেশে পাঠাতে উৎসাহিতে করতে রেমিট্যান্সের বিপরীতে সরকার প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ সুবিধা ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
সহায়তা পেতে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা লাগে:
বিদেশ হতে প্রেরিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক প্রযোজ্য বিনিময়হারে টাকায় রূপান্তরিত অর্থ প্রচলিত বিধিবিধান পরিপালন করে উপকারভোগীর হিসাবে জমা/উপকারভোগীকে প্রদানের সময় উক্ত অর্থের উপর ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদান করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় পরিচালিত বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ/ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে হবে।
একজন প্রবাসীর রেমিট্যান্সের ওপর প্রতিবারে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ ডলার/সমমূল্যের অর্থের জন্য কোন প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই প্রণোদনা সুবিধা পাওয়া যাবে।
১৫০০ ডলারের বেশি লেনদেনে প্রাপককে রেমিট্যান্স প্রেরকের বৈধ কাগজপত্র (যেমন-পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশি নিয়োগদাতা কর্তৃক প্রদত্ত নিয়োগপত্রের কপি/বিএমইটি প্রদত্ত সনদপত্রের কপি, ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবসার লাইসেন্সের কপি ইত্যাদি) রেমিট্যান্স প্রদানকারী ব্যাংক শাখায় দাখিল সাপেক্ষে নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে।
বিধিবহির্ভূতভাবে নগদ সহায়তা গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেলে পরবর্তীতে তারা এ সুবিধা প্রাপ্য হবে না এবং প্রদত্ত অর্থ তার কাছ থেকে আদায় করা হবে।
বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের প্রবাসী আয় আহরণের গড় মাসিক অংকের ভিত্তিতে তিন মাসের জন্য প্রয়োজনীয় নগদ সহায়তার অনুমিত পরিমাণের তহবিল সরকারি বরাদ্দ হতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইমপ্রেস্ট আগাম আকারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অনুকূলে হস্তান্তর করবে।
নগদ সহায়তার অর্থ যেভাবে বিতরণ হয়:
রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য একটি পৃথক টাকা হিসাব পরিচালনা করবে।
প্রাপকের হিসাব রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক ভিন্ন অন্য কোন ব্যাংকে হলে রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক ২ শতাংশ নগদ সহায়তাসহ বিইএফটিএন, আরটিজিএস, এনপিএসবি বা এমএফএস এর মাধ্যমে প্রাপকের হিসাবে জমা করবে।
বেনিফিশিয়ারির মোবাইল ফোনে তার অনুকূলে রেমিটেন্সের টাকা জমা হওয়ার মেসেজ/লেনদেনের রশিদ প্রদান করবে। উক্ত মেসেজে/লেনদেনের রশিদে সরকার প্রদত্ত নগদ সহায়তার পরিমাণ পৃথকভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।
শর্ত মোতাবেক প্রাপক রেমিটেন্স গ্রহণের দিন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল না করলে পরবর্তী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তা উপস্থাপন করলে রেমিটেন্স প্রদানকারী ব্যাংক তাকে প্রাপ্য নগদ সহায়তা প্রদান করবে। আগের নীতিমালায় এটি পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে জমা দেয়ার নিয়ম ছিল। এটি বর্তমানে আরো সহজ করা হলো।
চিত্রদেশ ডটকম//এলএইচ//