যেসব চিকিৎসায় খরচ কমছে ও বাড়ছে
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট সংসদে ঘোষণা করা হয়েছে। ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করা হয়েছে। এতে স্বাস্থ্যখাতের বেশ কিছু জায়গায় ব্যয় কমানো হয়েছে। ফলে রোগীদের চিকিৎসা খরচ কমতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টায় সংসদে বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এসব তথ্য।
অর্থমন্ত্রী জানান, পূর্বের মতোই এ বছরও স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। ওষুধ, চিকিৎসা সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসেবা পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাজেটে কিডনি চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ফিল্টার এবং সার্কিটের শুল্ককর কমানো হয়েছে। যেখানে আগে এ পণ্য আমদানিতে শুল্ক ছিল ১০ শতাংশ, আসন্ন বাজেটে সেটি ৯ শতাংশ কমিয়ে এক শতাংশ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট এইচএস কোডের অভাবে আগে স্পাইনাল নিডেল আমদানিতে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সে জটিলতা ছিল। বাজেটে এই পণ্যের জন্য এইচএস কোড সৃষ্টির পাশাপাশি আমদানিতে পাঁচ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
একইভাবে চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য করতে অ্যাম্বুলেন্স হ্রাসকৃত শুল্কে আমদানির সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এতে অ্যাম্বুলেন্সের দাম কমবে।
পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কিট আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। যদিও ডেঙ্গু রোগীদের এনএস-১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষার খরচ সরকারি হাসপাতালের জন্য ১০০ টাকা এবং বেসরকারি হাসপাতালের জন্য ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা আছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়া হবে।
এ ছাড়া ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধার আওতায় নতুন কিছু কাঁচামাল যোগ হচ্ছে। ফলে আশা করা যাচ্ছে ক্যান্সারের চিকিৎসা খরচ কমে আসবে
খরচ বাড়ছে কিছু চিকিৎসায়
প্রস্তাবিত বাজেটে ২০০টিরও বেশি মেডিকেল যন্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে কর বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। ফলে কিছু রোগে চিকিৎসা ব্যয়কে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
জানা গেছে, বিশাল অংকের এ বাজেটের ঘাটতি ধরা হচ্ছে দুই লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে দুই লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির চার দশমিক ছয় শতাংশ। বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল হিসেবে ব্যাংক খাত বেছে নিয়েছে সরকার।
ঘাটতি পূরণে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেবে বলে লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। এই অংক চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ হাজার ১০৫ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে এক লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার। তবে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রায় এটি বাড়িয়ে এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা ঠিক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ছিল সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। পরে এটি সংশোধন করে সাত লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা করা হয়।