প্রধান সংবাদ

মালদ্বীপের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম মোহাম্মদ সলিহের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সংযোগের উন্নয়নে ফলপ্রসূ দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেছেন।

 

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে দ্বিপক্ষীয় সংলাপ, মালদ্বীপ সরকারের কাছে ১৩টি সামরিক যান হস্তান্তর এবং বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করার পরে তিনি এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও সংযোগ উন্নয়নের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট সলিহের সঙ্গে বিশদ আলোচনা করেছি।’

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংলাপের সময় তারা দুই দেশের মধ্যে বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, যুব ও ক্রীড়া, মৎস্য ও কৃষি খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।

 

প্রেসিডেন্ট সলিহের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনাকালে শেখ হাসিনা দুই দেশের মধ্যে একটি অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) এবং পারস্পরিক বিনিয়োগ সুবিধার জন্য একটি দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার ওপর পুনরায় জোর দিয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমরা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে এখনও পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারিনি।’

 

আলোচনার ফলাফল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি এ কথা জানাতে পেরে আনন্দিত যে আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সামগ্রিক বিষয়ে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি। আমরা আমাদের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্তগুলোতে এ পর্যন্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছি এবং ফলাফল সন্তোষজনক পেয়েছি।’

 

তিনি বলেন, তারা বহুপক্ষীয় ফোরামে সহযোগিতা, একে অন্যের প্রার্থীদের সমর্থন এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা করেছেন।

 

প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করেন।

 

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি আধুনিক, সমৃদ্ধ ও উন্নত অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার অপেক্ষায় রয়েছে এমন প্রেক্ষিতে তারা আমাদের দুই দেশের জনগণের সুবিধার জন্য মালদ্বীপের সাথে বাংলাদেশের অভিন্নতার ক্ষেত্রসমূহে অংশীদারিত্বে আগ্রহী।

 

বাংলাদেশের বর্ধমান উৎপাদন ক্ষমতার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মালদ্বীপে অনেক মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহের প্রস্তাব দেন।

 

তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত সন্তুষ্টির বিষয় যে বাংলাদেশ থেকে স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের নিয়োগের জন্য মালদ্বীপের প্রস্তাব বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে।

 

এ প্রসঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘আমরা মালদ্বীপের ছাত্রদের জন্য বিশেষায়িত স্নাতকোত্তর মেডিকেল কোর্সের সুযোগ তৈরি করবো।’

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি এয়ারলাইনস ইউএস-বাংলার ফ্লাইট শুরুর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সও ঢাকা-মালে’র মধ্যে ফ্লাইট চালু করার কথা ভাবছে। আমরা আশা করি, সরাসরি ফ্লাইটের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং পর্যটন সহযোগিতার আদান-প্রদান বৃদ্ধি পাবে। আমরা একটি সরাসরি শিপিং লাইন স্থাপনের সম্ভাবনাও পর্যালোচনা করেছি।’

 

তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের নিজেদের জনগণের কল্যাণ আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার, সেহেতু কনস্যুলার এবং কমিউনিটির সমস্যাগুলো আমাদের আলোচনায় বিশেষভাবে প্রাধান্য পেয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা অনথিভুক্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়মিতকরণের বিষয়েও আলোচনা করেছেন, যাদের উভয় দেশের অর্থনীতিতে যথেষ্ট অবদান রয়েছে।

 

তিনি বলেন, বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতি উন্নতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার মালদ্বীপের নাগরিকদের জন্য আগমনের পর ভিসা ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

এর আগে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে এলেও মালদ্বীপে এটি তার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সাল বাংলাদেশ-মালদ্বীপ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য একটি যুগান্তকারী বছর।

 

প্রধানমন্ত্রী চলতি বছরের মার্চ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দুটি মেগা ইভেন্ট উদযাপনে প্রেসিডেন্ট সলিহের উপস্থিত থাকার কথাও কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। সূত্র বাসস।

 

 

চিত্রদেশ//এফটি//

 

 

 

 

Related Articles

Back to top button