আন্তর্জাতিকপ্রধান সংবাদ

মসজিদে তবলিগের পর ২০০০ মানুষ কোয়ারেন্টিনে

ভারতের এক মসজিদে তবলিগ জামাতে অংশ নেয়াকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দিল্লির আলামি মারকাজ বাংলেওয়ালি মসজিদে ওই তবলিগ জামাত অনুষ্টিত হয়েছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য হিন্দু।

এতে অংশগ্রহণকারী ১৭০ জনেরও বেশি লোককে দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। জানা গেছে, তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্তের লক্ষণ স্পষ্ট। ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে একসঙ্গে এত মানুষের নমুনা পরীক্ষার ঘটনা এটাই প্রথম।

প্রসঙ্গত, তবলিগ জামাত মুসলিমদের একটি জনপ্রিয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এতে অংশগ্রহণকারী মুসল্লিরা কমপক্ষে ৩ দিন মসজিদে একসঙ্গে অবস্থান করে থাকেন। এর আগে এই তবলিগ জামাত থেকেই ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় বহু মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দিল্লির ওই মসজিদে তবলিগে অংশ নেয়া আরও ১২০০ জনকে মসজিদের ভেতরেই কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। প্রশাসনের আশঙ্কা, তাদের অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন।

এলাকায় আর কারও করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা দেখার জন্য মসজিদের পাশে একটি অস্থায়ী চিকিত্সা শিবির গড়া হয়েছে এবং দক্ষিণ দিল্লির এ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার প্রায় দু’হাজার জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

মার্চের মাঝামাঝি সময়ে দিল্লির ওই বাংলাওয়ালি মসজিদের তাবলীগ জামাতে যোগ দেওয়া অনেকেই করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন। কেননা স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়াও সেখানে যোগ দিয়েছিলেন মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব এবং কিরঘিজস্তান হতে আগত মুসল্লিরা।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানাচ্ছে, মসজিদের জমায়েতে যোগ দেওয়ার পর একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১০ জনের কোভিড-১৯ সংক্রমণ ধরাও পড়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে ভাইরাস আক্রান্ত হাওয়া এক ব্যক্তিও মসজিদের জামাতে যোগ দিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

এছাড়া, শ্রীনগরে গত সপ্তাহে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এক ইমামও ওই তবলিগে অংশ নিয়েছিলেন। কাশ্মীরে নিজের বাড়িতে ফেরার আগে তিনি উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দেও যান। ফলে তার সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদেরও খুঁজে বের করার কাজ শুরু করেছেন স্বাস্থ্য বিভোগের কর্মকর্তারা।

প্রশাসন জানিয়েছে, মসজিদের ওই তবলিগে অংশ নেয়া ইন্দোনেশিয়ার একজন এবং সৌদি আরবের ছয়জনকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর দিল্লিতে কোয়ারেন্টিনে যাদের রাখা হয়েছে তাদের ওপর পুলিশের টহলদারি ছাড়াও ড্রোন দিয়ে নজরদারি করা হচ্ছে, যাতে সবাই লকডাউন মেনে চলে।

সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে দিল্লি, শ্রীনগর ও দেওবন্দে থাকা ওই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে। তবলিগ জমাত শেষে বহু অতিথিই ভারতের নানা প্রান্তে সফর করেছেন। আর তবলিগ শেষে তারা ২০-৩০টি বাসে করে এলাকা ছেড়ে চলে যান। তবে অনেকে মসজিদেই রয়ে যান। তাই তাদের মসজিদেই কোয়ারাইন্টাইনে রাখা হয়েছে।

এমন এক সময়ে এই সংবাদ এলো যখন ভারতে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার দেশটিতে ২ শতাধিক লোক করোনায় আ্রকান্ত হয়েছেন। ফলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়েছে। এই রোগে মারা গেছেন আরও ৩২ জন।

 

বিনিয়োগ বার্তা//এল//

 

Related Articles

Back to top button