প্রধান সংবাদ

মন্ত্রী-এমপিদের সাবধান করলেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার:
মন্ত্রী, সংসদ সদস্য (এমপি), বিভিন্ন সংস্থার প্রধান এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাবধান করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘সবাই সাবধান থাকবেন। কারণ আপনারা যে যা করেন সব খবর সঙ্গে সঙ্গে আমার কাছে চলে আসে।’

শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে নতুন যুক্ত হওয়া ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯ সিরিজের নতুন দুই উড়োজাহাজ ‘সোনার তরী’ ও ‘অচিন পাখি’ উদ্বোধনের পর আয়ো‌জিত অনুষ্ঠা‌নে প্রধান অতিথির বক্ত‌ব্যে তি‌নি এসব কথা ব‌লেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার আর কোনো কাজ নাই। দেশের দেখাশোনা করাই আমার কাজ। কে কি করলেন, সব দিকে আমার নজর আছে। যেই দুর্নীতি করবে তাদের ছাড় দেয়া হবে না। আমি দুর্নীতি বরদাশত করব না। এ দেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গি, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করব।’

মন্ত্রী-এমপিদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখানকার আইন-কানুন মেনে চলবেন। ‌কেউ আইন-কানুন লঙ্ঘন কর‌বেন না। যদি কেউ অনিয়ম করেন, তাহলে তার বিমানে চড়া বন্ধ হয়ে যাবে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়ম কানুন মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এটাকে কেউ অবহেলা করবেন না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানে যাত্রী সেবার পাশাপাশি লাভের বিষয়টাও দেখতে হবে। টিকিট নেই, বিমান খালি যায়, এ অবস্থা যেন না চলে। এছাড়া বিমানে যাত্রীরা যাতে হয়রানি না হয় সেজন্য কর্তৃপক্ষকে কড়া নজরদারি করতে হবে। আমাদের দেশে যারা বিদেশে থাকেন তারা অত্যন্ত কষ্ট করে পয়সা উপার্জন করেন। তাদের পাঠানো টাকায় বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়। তারা যেন কোনোক্রমেই এ বিমানবন্দরে নেমে হয়রানির শিকার না হয় এ বিষয়টা লক্ষ্য রাখতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি আমার জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করেছি। বাংলাদেশ যে উন্নত হতে পারে তা আমরা প্রমাণ করেছি। এই বিমানবন্দর একটা সাদামাটা বিমানবন্দর ছিল। ১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে তার পরিবর্তন করেছি। আমরা অন্যান্য পদক্ষেপও নিয়েছিলাম। আমরা চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করেছিলাম। বরিশাল, সৈয়দপুর ও রাজশাহী বিমানবন্দরকে উন্মুক্ত করেছি।’

আজ আমরা তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলাম জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে কার্গো বিমান নামার ব্যবস্থা থাকবে। কার্গো ভি‌লেজ গ‌ড়ে তোলা হ‌বে। আমারা দু‌টি কার্গো বিমান ক্রয় কর‌ব। কারণ কার্গো বিমা‌নে লাভ বেশি। তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করাটা বিশাল একটা কর্মযজ্ঞ। এ টার্মিনাল নির্মাণ কাজ এবং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯ সিরিজের নতুন দুটি উড়োজাহাজ ‘সোনার তরী’ ও ‘অচিন পাখি’ ক্রয় আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আরেকটি সূচক।’

শেখ হা‌সিনা ব‌লেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অনুযায়ী বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত এবং উন্নত দেশ হিসেবে গড়তে চাই। এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শুধু বিমান নয় অন্য সেক্টরেও আমরা উন্নয়ন করছি। যে কারণে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে।’

‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনকালে আমরা বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে উদযাপন করব। বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমরা নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে পরিণত হবে। আমরা ডেল্টা প্লান ২১০০ প্রণয়ন করেছি। আগামী প্রজন্ম যেন সুন্দর ও সুস্থভাবে একটা উন্নত দেশে জীবন-যাপন করতে পারে সেই পরিকল্পনা আমরা গ্রহণ করেছি’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের উন্নয়নের জন্য সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছি। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। দুর্নীতিবাজ যেই হোক, যত বড় শক্তিশালী হোক তাকে ছাড়া হবে না। দেশের সাধারণ মানুষ দিন রাত খেটে মর‌বে তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে না। অথচ অনিয়ম দুর্নীতি করে কেউ কেউ রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাবেন এটা চলবে না। দুর্নীতি কর‌লে তা‌কে শা‌স্তি পে‌তে হ‌বেই।’

চিত্রদেশ//এস//

Related Articles

Back to top button