ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত ১৮, আহত ৫শ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় ইলাজিগ প্রদেশে শুক্রবার রাতে আঘাত হেনেছে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। এতে কমপক্ষে ১৮ জন নিহতেএবং আরো ৫ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষের নিচে এখনও আটকা পড়ে আছেন আরো ৩০ জনের বেশি মানুষ।
শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৮.৫৫ মিনিটে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি ও আল জাজিরা। এর কেন্দ্রস্থল ছিল ইলাজিগ প্রদেশের সিভিরিস শহর। আর ভূপৃষ্ঠে এর গভীরতা ছিল ৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার। ভূমিকম্পের আঘাতে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং আতঙ্কিত লোকজন রাস্তায় নেমে এসেছিলো।
ভূমিকম্পটির তীব্রতা এত বেশি ছিল যে তুরস্কের প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া, লেবানন এবং ইরানেও এ ভূকম্পন অনুভূত হয়। তুরস্কের জরুরি বিভাগ জানিয়েছে, প্রথম ভূমিকম্পের পর প্রায় ৬০টি আফটারশক বা ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এদের মধ্যে দুটির মাত্রা ছিলো ৫ দশমিক ৪ এবং ৫ দশমিক ১।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হচ্ছে ইলাজিক প্রদেশের গেজিক জেলা। এখানে প্রচুর ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ায় শত শত মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বিধ্বস্ত ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও আটকা পড়ে আছে আরো ৩০ জনের বেশি মানুষ।
ভূমিকম্পের পরপরই উদ্ধারকাজ শুরু করেছে উদ্ধারকারী দলগুলো। দুর্গত এলাকাগুলোতে ৪শ’র বেশি উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করছেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীও। যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন তাদের জন্য উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে তাঁবু ও বিছানা পাঠানো হয়েছে। আবার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে এই ভয়ে প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও লোকজন খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে বলে জানা গেছে।
ভূমিকম্পের পরপরই ইলাজিক প্রদেশের গেজিক জেলা পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সোয়লু ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেত্তিন কোকা।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোকা সাংবাদিকদের বলেন, ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের মধ্যে ১৩ জনই ইলাজিগ প্রদেশের এবং বাকি পাঁচজন মালাতিয়ার বাসিন্দা।
এছাড়া ভূমিকেম্প আহত হয়েছে আরো ৫৫৩ জন। এদের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা গুরুতর। ফলে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে ভূমিকম্পের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে একটি টুইটার বার্তা প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ান। তিনি ওই বার্তায় দেশের জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, তুরস্কে ভূমিকম্প কোনো নতুন বিষয় নয়। দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর আগে ১৯৯৯ সালে পশ্চিমের শহর ইজমিতে ভূমিকম্পে প্রায় সতের হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।
চিত্রদেশ //এস//