ভয়ংকর হয়ে উঠছে পদ্মা
মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে আশ্রয়কেন্দ্র ভাসছে অথৈ পানিতে। বানভাসিদের ঘরের চাল পর্যন্ত পানি। তাই পানির মধ্যে ভেসে থাকা আশ্রয়কেন্দ্রেই ঠাঁই নিচ্ছেন বন্দরখোলাসহ শিবচর উপজেলার চরাঞ্চলের বানভাসিরা। ভয়াবহ বন্যা আর প্রবল স্রোতের কারণে পদ্মা নদীর ভাঙন দিন দিন বেড়েইে চলেছে। একদিকে বন্যা অপরদিকে নদীভাঙন এই দুই নিয়ে যেন ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে পদ্মা।
বন্দরখোলা ইউনিয়নের ‘শিক্ষার একমাত্র বাতিঘর’ খ্যাত নুরুদ্দিন মাদবর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবন, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন, একটি বাজারসহ বিস্তীর্ণ জনপদ এখন পানিতে ভাসছে। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে চরের ৮ হাজার পরিবার। গত কয়েক বছর ধরেই পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মা নদীর চরাঞ্চল মাদবরেরচর, চরজানাজাত, কাঠালবাড়ি ও বন্দরখোলা ব্যাপক আকারে ভাঙনের কবলে পড়ছে। এছাড়া সন্যাসিরচর ও শিরুয়াইল ইউনিয়নে আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ে ব্যাপকভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এ পর্যন্ত প্রায় চার শতাধিক ঘরবাড়ি কোনোমতে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বিস্তীর্ণ জনপদসহ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এলাকার বিভিন্ন সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এলাকার একমাত্র বাহন এখন নৌকা বা ট্রলার। ভয়াবহ ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে একাধিক স্কুল ভবন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
এদিকে চরাঞ্চলের ৫ ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। শিবচরের চরাঞ্চলের প্রায় সবাই কৃষি নির্ভর ও দিনমজুর। পদ্মার পানি বেড়ে গিয়ে চরাঞ্চলের ৫টি ইউনিয়ন সর্ম্পূণ প্লাবিত হয়ে গেছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। উপজেলা প্রশাসনের ঘোষিত আশ্রয়কেন্দ্র চরাঞ্চলের ৯টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উঠেছে এসব মানুষ।
নদীভাঙন প্রতিরোধে স্থানীয় সংসদ সদস্য চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর নির্দেশে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ত্রাণ তৎপরতাও শুরু হয়েছে দুর্গত এলাকায়। জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর নির্দেশে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ইউনিয়নের বন্যা কবলিতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছেন।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, চরাঞ্চলের ৫টি ইউনিয়নসহ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বন্যা কবলিতদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। আট হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কাজ শুরু হয়েছে। একযোগে সকল ইউনিয়নের বন্যার্তদের মাঝে সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে।
চিত্রদেশ//এস//