প্রধান সংবাদ

বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে দিল্লি, রাতভর সংঘর্ষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে গোটা ভারত। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে খোদ রাজধানী দিল্লিতেও। মিছিল নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদে রোববার সারারাত ধরে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী ও সামাজিক কর্মীরা। এসময়

এদিকে বিক্ষোভের কারণে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা তাদের নাগরিকদের উত্তর-পূর্ব ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে।

দিল্লির একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মারধর করার প্রতিবাদে মূলত এই বিক্ষোভের সূত্রপাত। দিল্লির শিক্ষার্থীদের সমর্থনে ভারতের আরো কয়েকটি স্থানে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় দিল্লির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। এসময় দু পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় হয় বলে জানা গেছে ।

প্রতিবেশী তিন দেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত অমুসলিম অভিবাসীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে ওই নতুন এই আইনে। তবে ভারতে বসাবাসকারী মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিধান রাখা হয়নি এই আইনে।

এই বিতর্কিত আইনের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে আসাম, ত্রিপুরা, মনিপুর, মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্য। গত কয়েকদিনের অব্যাহত বিক্ষোভে আসামেই মারা গেছে কমপক্ষ পাঁচজন। সেখানে আরো ২৭ জন আহত হয়েছে। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে বেশ কিছু রাজ্যে মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই আইনে মেনে নেয়া হবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গসহ কমপক্ষে ছয়টি রাজ্য।

এ অবস্থায় রোববার বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ভারতের দিল্লিতেও। বিক্ষোভকারীরা রাস্তা বন্ধ করে এবং বাস পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রকাশ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে। এসময় স্বনামধন্য জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। সংঘর্ষের সূত্রপাত কীভাবে হলো তা এখনো পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি। বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়ে মারা হলে তারা টিয়ার গ্যাস মেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

এসময় অন্তত তিনটি বাস ও বেশকিছু মোটর সাইকেল জালিয়ে দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা পুলিশের কাছ থেকে দূরে সরে যান।

বিবিসি’র কিঞ্জাল পান্ডিয়ার কাছে স্থানীয় পুলিশের কয়েকজন জানিয়েছেন যে সেসব এলাকার কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী সহিংসতার সূত্রপাত ঘটায়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মারধর করে। এর জের ধরে দক্ষিণ দিল্লির ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের স্কুলগুলো সোমবার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে দিল্লিতে বাস পোড়ানোর ঘটনায় রাজধানীর পুলিশের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলেছেন খোদ দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। তিনি বাস পোড়ানোর একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বলেন, ‘দেখুন এই ছবিগুলো। কারা বাস, গাড়িতে আগুন লাগাচ্ছে। এই ছবিই প্রমাণ করে যে বিজেপি নোংরা রাজনীতি করছে। দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে। তারা অমিত শাহকে রিপোর্ট করে। দিল্লিতে বিজেপি বিরোধী আসনে এবং তারা আম আদমি সরকারের চরম বিরোধী।’

তবে তার অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন দিল্লি পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

 

চিত্রদেশ//এস//

Related Articles

Back to top button