বরিশালে প্রশাসন-আ.লীগ বৈঠকে সমঝোতা
স্টাফ রিপোর্টার:
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের বিষয়টি অবশেষে সমঝোতা হয়েছে। বৈঠকে উভয়পক্ষ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়ার ব্যাপারে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদলের আহ্বানে রোববার রাতে নগরীর রাজা বাহাদুর সড়কে তার সরকারি বাসভবনে এ বৈঠক হয়।
আজ সোমবার (২৩ আগস্ট) ভোরে ইমেইলে সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ দফতর থেকে এ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বৈঠকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান, জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার, জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন, র্যাব-৮ এর অধিনায়ক জামিল হাসান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, বিসিসির প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদলের বাসভবনে তাদেরকে চায়ের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমন্ত্রণ পেয়ে তিনিসহ বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বিসিসির প্যানেল মেয়র চা-চক্রে যোগ দেন।
তিনি বলেন, চা-চক্রে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ১৮ আগস্ট রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। আলোচনার মাধ্যমে সেই দিন রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির অবসান ঘটেছে।
জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, বৈঠকে সবপক্ষ অতীতের ভুল-বোঝাবুঝি ভুলে নান্দনিক বরিশাল গড়ার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি ১৮ আগস্ট রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া মামলাগুলো উভয়পক্ষ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রত্যাহারের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামীতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়েও সবাই সতর্ক থাকবেন বলে আশ্বস্ত করেন। বলা যায় ইতিবাচক বৈঠক হয়েছে।
তবে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। বৈঠকের পর বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদল ও জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।
গত বুধবার রাতে ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে বরিশালে পুলিশ, আনসার ও স্থানীয় ছাত্রলীগ সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে, ওই রাতে সদর উপজেলা ইউএনওর সরকারি বাসভবনে হামলা চালান স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, শ্রমিক ইউনিয়ন, আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলা দায়ের করেন সদর থানার ইউএনও মো. মুনিবুর রহমান। অন্যটি করেন কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরির্দশক (এসআই) শাহজালাল মল্লিক। দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয় মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে।
চিত্রদেশ//এফটি//