পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
অবশেষে ভাগ্য নির্ধারণ হলো পাকিস্তানের। দেশটির ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই মুসলিম লিগের (পিএমএল-এন) প্রধান শাহবাজ শরিফ। ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ১৭২ জন সদস্যের সমর্থন লাগে, সেখানে প্রতিনিধি পরিষদে ১৭৪ ভোট পেয়ে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন।
অনাস্থা ভোটে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানো ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আইনপ্রণেতারা গণপদত্যাগ করায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
সোমবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসে। অধিবেশন পরিচালনা করছেন ডেপুটি স্পিকার কাসেম সুরি। তিনিই ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করেছিলেন। এরপর সুপ্রিম কোর্ট তার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে অনাস্থা ভোট আয়োজনের নির্দেশ দেয়।
তবে অনাস্থা ভোট প্রত্যাখ্যান করায় ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পিটিআইয়ের সদস্যরা পার্লামেন্টে থেকে ওয়াক আউট করেন।এরপর বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ।
মূলত সংবিধান অনুযায়ী ২০২৩ সালের আগস্টে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে ইমরান খানকে।
এর আগে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় ইমরান খান।
এদিকে ক্ষমতা হারানোর পরদিন রোববার (১০ এপ্রিল) টুইটারে ইমরান খান বলেছিলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হয়। কিন্তু শাসন পরিবর্তনে বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আজ আবার পাকিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছে।
ইমরান খানের এমন বার্তার পর রোববার রাত থেকেই ইসলামাবাদ, করাচি, লাহোরসহ সব বড় বড় শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ইমরানের সমর্থকরা।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব নাকচ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। এরপরই ইমরান খানের পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এরপর বিষয়টি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতে যায়। টানা ৫ দিন শুনানির পর বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) আদালত অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের আদেশ ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেন এবং শনিবার (৯ এপ্রিল) সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আয়োজনের নির্দেশ দেন। ভোটে ৩৪২ জন সদস্যের মধ্যে ১৭৪ জন সদস্য ইমরান খানের প্রতি অনাস্থা ভোট দেন। এর মাধ্যমে দেশটির ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রীকে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা ছাড়তে হলো। একইসঙ্গে পাকিস্তানের নির্বাচিত একজন প্রধানমন্ত্রীও এখন পর্যন্ত মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেন না।
সূত্র: ডন
চিত্রদেশ//এফ টি//