নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে র্যাংকিংয়ে ছয়ে উঠে গেল বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক:
নিউজিল্যান্ডকে ৪ রানে হারিয়ে আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে ছয় নম্বর পজিশনে উঠে গেলে বাংলাদেশ। এর আগে কিউইদের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম খেলায় জিতে দশ নম্বর পজিশন থেকে সাতে উঠে যায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন দলটি।
শুক্রবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৪১ রান করে বাংলাদেশ। টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রানে ইনিংস গুটায় নিউজিল্যান্ড। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ৪ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৪২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ২.৩ ওভারে দলীয় ১৬ রানে সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র। সাকিবের পর কিউই শিবিরে আঘাত হানেন মেহেদি হাসান। তার শিকার হন টম বান্ডেল। ৩.১ ওভারে দলীয় ১৮ রানে ফেরেন এ ওপেনার।
১৮ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর তৃতীয় উইকেটে উইলি ইয়াংকে সঙ্গে নিয়ে ৪৭ বলে ৪২ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক টম ল্যাথাম।
ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এই জুটির বিচ্ছেদ ঘটান সাকিব। তার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ২৮ বলে ২২ রান করে সাজঘরে ফেরেন ইয়াং। ১০.৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৬১ রান।
পাঁচ নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে আবারো সেই নাসুম আহমেদের স্পিনে বিভ্রান্ত হন কলিন ডি গ্রান্ডহোম। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১ রান করে নাসুমের বলে আউট হওয়া নিউজিল্যান্ডের এ তারকা ব্যাটসম্যান এদিনও সেই একই বোলারের স্পিনে শিকার হন। দ্বিতীয় ম্যাচে ফেরেন ১০ বলে মাত্র ৮ রান করে। তার বিদায়ে ১৪.২ ওভারে ৮৫ রানে ৪ উইকেট হারায় কিউইরা।
নাসুমের পর কিউই শিবিরে আঘাত হানেন মেহেদি হাসান। তার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন হেনরি নিকোলাস। ১৫.৩ ওভারে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন নিকোলাস।
এরপর কলিন ম্যাককলিনচকে সঙ্গে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ২৮ বলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক টম ল্যাথাম। এই জুটিই দলকে জয়ের পথে নিয়েছিল।
শেষ ওভারে নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ২০ রান। কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম চার বলে দেন ৭ রান। পরের দুই বলে কিউইদের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। পঞ্চম বলটি ‘নো’ করেন ফিজ। শেষ দুই বলে নিউজিল্যান্ডকে ৮ রান করতে হতো। পঞ্চম বলে দুই রান নেয় নিউজিল্যান্ড।
জয়ের জন্য শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে হতো নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথামকে। কিন্তু তিনি এক রানের বেশি নিতে পারেননি। ৪ রানের জয় পায় টাইগাররা।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৪১ রান করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। ৩৭ রান করে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এছাড়া ৩৩ রান করেন আরেক ওপেনার লিটন দাস।
শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুভ সূচনা করে বাংলাদেশ। লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে ওপেনিংয়ে ৯.৩ ওভারে স্কোর বোর্ডে ৫৯ রান যোগ করেন নাঈম।
২৯ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৩৩ রান করে রাচিন রবিন্দ্রর স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে ফেরেন লিটন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১ রানে আউট হয়েছিলেন তিনি।
লিটন আউট হওয়ার পর তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিপদে পড়েন মুশফিকুর রহিম। রাচিন রবিন্দ্রর বলে গোল্ডেন ডাক পান জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক।
চার নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ বলে ১২ রান করে ফেরেন সাকিব আল হাসান। তার বিদায়ে ৭২ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ দল।
এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত রান সংগ্রহের চেষ্টা করতে গিয়ে আউট হন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। রাচিন রবিন্দ্রর করা বলটি বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন এ ওপেনার। ৩৯ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ৩৯ রান করে ফেরেন তিনি।
নাঈম আউট হওয়ার পর ৩ বলে ৩ রান করে ফেরেন আফিফ হোসেন। তার বিদায়ে ১৬.২ ওভারে ১০৯ রানে বাংলাদেশ হারায় পঞ্চম উইকেট।
এরপর নুরুল হাসান সোহানকে সঙ্গে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ২২ বলে ৩২ রান যোগ করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ইনিংসের শেষ বলে আউট হন সোহান। তিনি ফেরেন ৯ বলে ১৩ রান করে। ৩২ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৩৭ রান করে অপরাজিত থাকেন রিয়াদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪১/৬
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৩৭/৫
ফল: বাংলাদেশ ৪ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (বাংলাদেশ)।
চিত্রদেশ//এফটি//