দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি; সবজিতেও নেই স্বস্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্রব্যমূল্য যেন প্রতিনিয়তই লাগাম ছাড়াচ্ছে। মাছ-মাংসের ওপর ভরসা বাদ দিয়ে সবজিতেও স্বস্তি আনতে পারছে না ক্রেতারা। এতে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের।
আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।
বাজারে সবজির চড়া দামই চলছে। শসা প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও অন্যান্য সবজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে চললেও বরবটি, পটলের দাম বাড়তি হয়ে ১০০ টাকা ছুঁয়েছে।
এছাড়া প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। গাজর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। ভালো মানের লেবু রমজানের প্রথম দিন ৮০ টাকা হালি বিক্রি হলে আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা হালি।
পাশাপাশি বাজারে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, রমজানের আগে যে করলা প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেটির দাম কমে এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, ঝিঙা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩০, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, বাঁধা কপি প্রতি পিস ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০, শিম প্রতি কেজি ৪০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা এবং আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর হাতিরপুল বাজারের এক ক্রেতা অভিযোগ করেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে রমজান মাসে সব কিছুর দাম কমিয়ে দেয়া হলেও, আমাদের দেশে ঘটে উল্টোটা। এমনকি সবজির দামও বেড়ে যায়। আমাদের মত সাধারণ মানুষ শসা কীভাবে ১০০/১২০ টাকা কেজি দরে কিনবো? এ ছাড়া লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা হালি, পটল, বরবটির দামও প্রতি কেজি ১০০ টাকার ওপরে।
তবে, বিক্রেতারা বলছেন, দুই একটি ছাড়া, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে বাকি সবজি। তারা বলেন, আজকের বাজারে শসা, বরবটি, পটল প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাকিগুলোর দাম ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। বাজারে বিভিন্ন সবজি নতুন করে উঠছে। এগুলোর সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে সেগুলোর দাম কমে আসবে। আর যেই সবজিগুলোর দাম ১০০ বা তার চেয়ে বেশি চলছে এগুলো এখন সিজন শেষের সবজি, নতুন করে ক্ষেত থেকে উঠতে শুরু করলে দাম কমে যাবে। এ ছাড়া রমজানের বাজারের হিসেব করলে আজকের বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শসা। তবে অন্যান্যবার রমজান মাসে যেভাবে বেগুনের বাড়তি থাকে সেই তুলনায় এবার তুলনামূলক বেগুনের দাম কম।
এদিকে, কিছুটা কমছে পেঁয়াজের ঝাঁঝ। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে আদা-রসুন। নতুন রসুন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা ও আদা ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে, অস্বস্তি রয়েই গেছে মাছ-মাংসের বাজারে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা। আবারও কোথাও তা ২৪০ টাকা। সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা। আবারও ৭৫০ টাকা ছাড়িয়েছে গরুর মাংসের দাম। রমজানকে কেন্দ্র করে এই অস্থিরতা তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
মাছের বাজারে আকারভেদে তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৩০ ও পাঙাশ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহেও ১০ থেকে ২০ টাকা কম দামে বিক্রি হয়েছে। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ৩০০ থেকে শুরু করে আকারভেদে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ৬০০ টাকার নিচে নেই পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছ। মাছ যত বড়, বিক্রি হচ্ছে ততো বেশি দামে।
//এস//