চেন্নাইকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে ফের শীর্ষে মুম্বাই
রোহিত শর্মাকে বিশ্রাম দিয়ে অধিনায়ক করা হলো কাইরন পোলার্ডকে। কিন্তু বোঝাই গেলো না, ম্যাচে রোহিত নেই। ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসকে রীতিমত বিধ্বস্ত করে ছাড়ল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারানোর সঙ্গে সঙ্গে এবারের আইপিএল থেকে চেন্নাইয়ের বিদায়ঘণ্টা প্রায় নিশ্চিত করে দিলো গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বোলারদের সামনে শুরুতে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে চেন্নাই সুপার কিংসের ব্যাটিং লাইনআপ। ২০ ওভারে তিন বারের চ্যাম্পিয়নরা ৯ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল মাত্র ১১৪ রান।
মুম্বাই বোলারদের মধ্যে ট্রেন্ট বোল্ট একাই নেন ১৮ রানে ৪ উইকেট। বুমরাহ ২৫ রান নিয়ে নেন ২ এবং রাহুল চহার ২২ রান দিয়ে নেন ২উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে কোনো উইকেটই হারাতে হয়নি মুম্বাইকে। ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল তারা। ইশান কিশান ৬৮ এবং কুইন্টন ডি কক অপরাজিত থাকেন ৪৬ রানে। আইপিএলের ইতিহাসে এই প্রথমবার ১০ উইকেটে ম্যাচ হারল চেন্নাই।
এবারের আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল চেন্নাই এবং মুম্বাই। সেই ম্যাচ জিতেছিল ধোনির দল। প্রথম ম্যাচ জিতে শুভ সূচনা করলেও এরপর খেই হারিয়ে ফেলে চেন্নাই। আজ রাতে তাদেরকে বিধ্বস্ত করে প্রতিশোধ নিল মুম্বাই।
আজকের হারের ফলে এবারের টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকেই গেল চেন্নাই। অঙ্কের হিসেবে আশা বেঁচে থাকলেও চেন্নাইয়ের পক্ষে প্লে অফে পৌঁছনো আর সম্ভব নয়। কারণ, ১১ ম্যাচ খেলে তাদের পয়েন্ট মাত্র ৬। বাকি ৩ ম্যাচের প্রতিটিতে জিতলেও হবে ১২। প্রতিবার প্লে অফে খেলে চেন্নাই। এবার আর তা সম্ভব হলো না তাদের।
এরই মধ্যে তিন দলের পয়েন্ট ১৪ করে। ১০ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে কেকেআর। বাকি চার ম্যাচে তারা একটিতেও যদি জেতে, তাহলে আনুষ্ঠানিকভাবেই বিদায় হয়ে যাবে চেন্নাইর। ধোনিদের হারিয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে আবারও টেবিলের শীর্ষে উঠে আসলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু এবং দিল্লি ক্যাপিটালসেরও পয়েন্ট ১৪ করে। তবে রান রেটে এগিয়ে রয়েছে মুম্বাই।
টস জিতে প্রথমে চেন্নাইকে ব্যাট করতে পাঠায় মুম্বাই। রোহিত শর্মার জায়গায় আজ দলকে নেতৃত্ব দেন কাইরন পোলার্ড। আগের ম্যাচে বাঁ-পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছিলেন রোহিত। তিনি আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায়নি। তাই মুম্বাইকে নেতৃত্ব দেন পোলার্ড। রোহিতের জায়গায় প্রথম একাদশে জায়গা পান সৌরভ তিওয়ারি।
প্রথম একাদশে একাধিক পরিবর্তন আনে চেন্নাই। শেন ওয়াটসন, কেদার যাদব, পীযুষ চাওলাকে দলের বাইরে রেখে নামে চেন্নাই। ইমরান তাহির, ঋতুরাজ গায়কোয়াড় ও নারায়ণ জগদিসানকে সুযোগ দেওয়া হয়।
দলে একাধিক পরিবর্তন এনেও সুবিধা করতে পারল না চেন্নাই। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একা লড়লেন স্যাম কুরান। শেষ পর্যন্ত তিনি ৫২ রানে আউট হন বোল্টের বলে। কুরান রান পাওয়ায় চেন্নাই ১১৪ রান করে। তিনি ও ইমরান তাহির ৪৩ রানের পার্টনারশিপ করার কারণে একশো পেরোতে পারল চেন্নাই।
ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বিপর্যয় নামে চেন্নাই শিবিরে। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে (০) এলবিডব্লিউ করেন ট্রেন্ট বোল্ট। যশপ্রীত বুমরা তাঁর প্রথম ওভারেই অম্বতি রায়ুডু (২) ও জগদিসানকে (০) পর পর দু’ বলে আউট করেন। দ্বিতীয় ওভারেই ব্যাট করতে নামেন ধোনি। চেন্নাই ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দু’ প্লেসি রানের মধ্যে ছিলেন। তিনিও (১) ব্যর্থ এদিন। কুইন্টন ডি’ ককের হাতে তালুবন্দি হন দু’ প্লেসি।
ম্যাচ জিততে হলে চেন্নাই বোলারদের শুরু থেকেই উইকেট তুলতে হতো; কিন্তু ধোনির বোলাররা সমস্যায় ফেলতে পারেনি মুম্বাইকে। ইশান কিশাণ ও কুইন্টন ডি ককের দাপটে ১২.২ ওভারে ১১৬ রান করে ফেলে মুম্বাই।