অর্থ-বাণিজ্য

চাল-ডালের দাম বেড়েছে, কম সবজির

স্টাফ রিপোর্টার:
দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বেড়েছে জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। চাল-ডাল, তেল-আটাসহ যে পণ্যগুলো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় জীবন ধারণের জন্য সেগুলোরই দাম বেশি। তবে বাজারে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে সবজি। করোনা ভাইরাসের এই আতঙ্কের মধ্যে নতুন করে বাড়েনি সবজির দাম।

আজ (১০ এপ্রিল) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য মতে, গত সপ্তাহে ২৮ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া খোলা আটার দাম বেড়ে হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। মাঝারি দানার মসুর ডাল গত সপ্তাহে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হয়েছিল, তা এখন বেড়ে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি হয়েছে। বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। আর ছোট দানার মসুরের ডালের দাম বেড়ে হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে।

হঠাৎ করে মসুর ডাল ও আটার দাম বাড়ার কারণ হিসেবে শেওড়াপাড়ার ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, পাইকারিতে ডাল ও আটার দাম বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে কমেছে সরবরাহ। বাড়তি দামে কেনার কারণে আমরাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

এদিকে, চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬৮ টাকা, পাইজাম ও লতা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি এবং স্বর্ণ ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম নতুন করে বাড়েনি। তবে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পরপরই চালের দাম বেড়েছিল। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পূর্বে মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা, পাইজাম ও লতা ৪২ থেকে ৪৮ টাকা এবং স্বর্ণা ৩২ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

চালের দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী রফিকুল বলেন, চালের দাম এখন নতুন করে আর বাড়ছে না। যা বাড়ার আগেই বেড়ে গেছে। তবে এখন চালের সরবরাহ কম। বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর চাল পাওয়াই যাচ্ছে না।

শেওড়াপাড়া বাজারে ২ কেজি চাল কিনতে ছিলেন রিকশাচালক হাবিব বলেন, এখন রিকশা নিয়ে রাস্তায় নামলেও আয় তেমন হয় না। যা ভাড়া মারি তার প্রায় সবই গ্যারেজে জমা দিতে হয়। অল্প কিছু টাকা হাতে থাকে। এই চাল, ডালের যে দাম এই টাকা দিয়ে তিন বেলা কিনে খাওয়া সম্ভব না। করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা খুব কষ্টে আছি। এ সময় চাল-ডালের দাম কম থাকলে পরিবার নিয়ে দুমুঠো খেতে পারতাম।

চাল-ডালের দামে অস্বস্তি থাকলেও করোনা আতঙ্কের মধ্যে সবজির দাম নতুন করে বাড়েনি। তবে বাজারে নতুন আসা সজনের ডাটা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে। অবশ্য এই সবজিটি বাদে বাকিগুলো সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে।

বাজারে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি বিক্রি হচ্ছে একই দামে, প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পাকা টমেটো ২৫ থেকে ৪০ টাকা, শিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ২০ থেকে ৩০ টাকা, মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে এ সব সবজি এমন দামেই বিক্রি হচ্ছে।

তবে কিছুটা দাম কমেছে কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের। ১৫-২০ টাকা পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ এখন ১০-১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। অবশ্য রসুন ও আদার দামে এখনও বেশ চড়া। আমদানি করা রসুন ১৭০-১৮০ এবং দেশি রসুন ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকা।

সবজির পাশাপাশি কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দামে। ১২০-এ উঠে যাওয়া ডিমের ডজন এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। আর ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। তবে খামারে ডিম ও মুরগির দাম অনেক কম।

চিত্রদেশ//এস//

Related Articles

Back to top button