প্রধান সংবাদ

চট্টগ্রাম আদালতে হামলা-ভাঙচুর, আইনজীবী নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের সাবেক অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে নেওয়ার সময় তার সমর্থকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আদালত এলাকায় বেশ কয়েকটি স্থাপনা ভাঙচুরসহ পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ সময় চট্টগ্রাম আদালতের এক শিক্ষানবিশ আইনজীবী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকেই।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অহিংস গণ-অভ্যুত্থানের আহ্বায়ক মোস্তফা আমীনসহ ১২১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নিহত সাইফুল ইসলাম আলিফ লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম জালাল উদ্দিন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল বলেন, সাইফুল ইসলাম ২০১৮ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। পরে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবেও নিবন্ধন পান। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ইসকনের অনুসারীরা আদালত এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা শুরু করলে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ তাদের বাধা দেন। এরপর তাকে তুলে নিয়ে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম টাওয়ারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সাইফুলকে কুপিয়ে আহত করে ইসকন সদস্যরা। গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুলকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অ্যাডভোকেট মোক্তার উদ্দিন সাগর নামে এক আইনজীবী জানান, আমার চোখের সামনে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে কোপানো হয়েছে।

চমেক হাসপাতালের নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় ৭-৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিম্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করেন। সড়কপথে আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) আলোচিত এই সংগঠককে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। সোমবার রাতে তাকে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়।

আজ (মঙ্গলবার) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মহানগর-ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণকে। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আদালতের আদেশ মোতাবেক চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এসময় আগে থেকে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় জড়ো হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা প্রিজন ভ্যান আটকে দেন। পরে পুলিশ ও বিজিবি মিলে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।

Related Articles

Back to top button